পলিথিন নিষিদ্ধের আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের দাবি
পলিথিন নিষিদ্ধের আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য পরিবেশ অধিদফতরকে সক্রিয় ভূমিকা পালনসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নাসফসহ ১৪টি সংগঠন।
শনিবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘পলিথিন-প্লাস্টিকের ছড়াছড়িতে হুমকির মুখে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ; পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে চাই কার্যকর উদ্যোগ’ শীর্ষক এক মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংগঠনগুলোর অন্য দাবি হচ্ছে : নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা; পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ ও ঠোংগা ইত্যাদি সহজলভ্য করা এবং এগুলো ব্যবহারে জনগণকে আগ্রহী করা; বন্ড লাইসেন্সের মাধ্যমে আমদানিকৃত পলি প্রোপাইলিন পলিথিন শপিং ব্যাগ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। টিস্যু ব্যাগ তৈরির কাঁচামাল আমদানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা; পরিবেশ অধিদফতর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা; প্লাস্টিক বর্জন, হ্রাস, পুনঃব্যবহারের ক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা; প্লাস্টিক বর্জন, হ্রাস, পুনঃব্যবহার ও পুনঃব্যবহারযোগ্য করার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত দায়িত্ব পালনে নাগরিকদের সচেষ্ট হওয়া এবং প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় স্থানীয় সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরকারকে দ্বৈত নীতি ত্যাগ করতে হবে। কারণ সরকার একদিকে পলিথিনের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করার কথা বলছে; অন্যদিকে পাটকলগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে সাধারণ মানুষ পাটের ব্যাগ ব্যবহারে দিন দিন উৎসাহ হারাচ্ছে। একটি প্লাস্টিক ব্যাগ মাটিতে মিশে যেতে সময় লাগে প্রায় এক হাজার বছর। সে জন্যই প্লাস্টিক বর্জ্য কীভাবে রিসাইকেল করা যায়, তা বিজ্ঞানীদের কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ। সারা দুনিয়াতেই প্লাস্টিক বিশেষ করে একবার ব্যবহৃত হয় এমন প্লাস্টিক পণ্য এক বিশাল সমস্যা। রাজধানীর খাল-নর্দমা পরিষ্কার করে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় প্লাস্টিকের বোতল। এ কারণেই বর্ষা মৌসুমে রাজধানীজুড়ে জলজট তৈরি হয়। ব্যবহারের পর এসব জিনিস বিভিন্ন জলাশয়ে ও যত্রতত্র ফেলে দেওয়ায় পরবর্তী সময়ে তা নদী হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ছে। সেখান থেকে জলজ প্রাণী তা গ্রহণ করছে। এসব প্রাণীর মাধ্যমে তা আমাদের খাদ্য চক্রে প্রবেশ করছে। ফলে দিন দিন তা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, পবার সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, নাসফের সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম সিদ্দিক আলী, সহ-সম্পাদক মো. সেলিম, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদ, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিমউদ্দীন, বিডিক্লিকের সভাপতি আমিনুল ইসলাম টুব্বুস, সুবন্ধনের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান, গ্রিনফোর্সের আহসান হাবিব, বানিপার সভাপতি প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
এমএইচএন/এসকেডি