এক বছর কারাদণ্ডের রায় শুনে আদালত থেকে পালালেন আসামি
মামলার রায়ে এক বছরের সাজা ঘোষণার পর আদালত থেকে পালিয়েছেন এক আসামি। সোমবার (৪ অক্টোবর) প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালত ২২ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলায় আসামি আবুল হাশেম মাঝিকে (৬০) এক বছরের কারাদণ্ড দেন।
রায় ঘোষণার পর আসামি আবুল হাশেম মাঝি আদালতে ছিলেন বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন আসামির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আশীষ কুমার শীল। এ সময় আদালত জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কিন্তু কারাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যদের ডাকা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এই সুযোগে আবুল হাশেম পালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, সোমবার আবুল হাশেম মাঝির ২২ লাখ টাকা চেক ডিজঅনার মামলার রায়ের দিন ছিল। আমি আবুল হাশেম মাঝির আইনজীবী। চেক ডিজঅনার মামলায় আদালত এক বছরের কারাদণ্ড ও ২২ লাখ টাকা দেওয়ার রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামি আবুল হাশেম মাঝি আদালতে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় কোনো পুলিশ উপস্থিত ছিলেন না। এরপর আদালতের কাজ শেষ করে বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান। তখনও আসামি কাঠগড়ায় ছিলেন। এরপর আদালত থেকে মানুষজন যখন বেরিয়ে গেছেন। এরই ফাঁকে আসামি আবুল হাশেম মাঝিও আদালত থেকে বেরিয়ে গেছেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুদ্দিন পারভেজ বলেন, চেক ডিজঅনার মামলায় বিচারক আসামিকে সাজা দেন। তাঁকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যদের ডাকা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এ সুযোগে আসামি পালিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, জেলা কোর্ট পুলিশ প্রায়ই দায়িত্বে গাফিলতি করে। এর আগেও দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে জেলা কোর্ট পরিদর্শককে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে জেলা কোর্ট পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবিরের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
পলাতক মো. আবুল হাশেম মাঝি নোয়াখালী জেলার সদর থানার বেদিপুর গ্রামের মৃত নাসির মিয়ার ছেলে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে মো. আবুল হাশেম মাঝি হাটহাজারীর মেসার্স চারিয়া ব্রিকস ফিল্ডের মালিক মো. কাশেমের সঙ্গে ৫০ লাখ ইট প্রস্তুত করার জন্য শ্রমিক সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এ জন্য তাদের কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা নেন হাশেম। কিন্তু তিনি কোনো শ্রমিক সরবরাহ করেননি। পরে টাকা ফেরত চান কাশেম।
এ ঘটনায় আবুল হাশেম মাঝি ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল ২২ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করেন। কিন্তু চেকটি ব্যাংককে জমা দেওয়ার পর দেখতে পান যে আসামির ব্যাংক হিসাব ২০১৭ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চেকটি ডিজঅনার হয়। এরপর ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বরে আসামির বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা করেন। আদালত শুনানি শেষে আসামির এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় প্রদান করেন।
কেএম/ওএফ