ভিসা পদ্ধতি সহজ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি
বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, কীভাবে ভিসা পদ্ধতি সহজ করা যায়। মানুষ যাতে আসতে পারে, আমাদের এ দেশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।’
‘আপনারা কয়েকদিন আগে দেখেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে উদ্বোধনকালে বক্তব্যে বলেছেন, বিদেশীদের জন্য একটি এক্সক্লুসিভ জোন করা হবে। সে লক্ষ্যও কিন্তু অগ্রসর হচ্ছে।’
পর্যটন উদ্যোক্তারা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। আপনারা তাদের জন্য প্রণোদনামূলক ঋণ ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু প্রায় আড়াই মাস চলে যাচ্ছে, তারা এ ঋণ পায়নি। কিছু জটিলতার কথাও তারা বলেছেন। আর কতদিন লাগবে তাদের ঋণ পেতে? সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন করেন উপস্থিত একজন সাংবাদিক।
জবাবে প্রতিমন্ত্রীর পাশে বসা বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, এ শিল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী দেড় হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। আমরা সব স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে মিটিং করেছি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সচিব বলেন, ‘আমরা পত্র দিয়েছি। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
‘বাংলাদেশ ব্যাংক পজিটিভলি এটা দ্রুত দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই এটা সমন্বয় করা হবে এবং দেওয়া হবে।’
দেশে নতুন-নতুন পর্যটন কেন্দ্র খুঁজে বের করা এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে একটি মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলেও জানান মো. মোকাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘তিনটি ফেজে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হবে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে তা শেষ হবে।’
বিশ্ব পর্যটন দিবসে নানা কর্মসূচি
মহামারির চ্যালেঞ্জের মধ্যে ২৭ সেপ্টেম্বর এবারের বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত হতে যাচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, পর্যটন দিবসের লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্ববাসীকে পর্যটনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন ও জাতীয় অর্থনীতিতে পর্যটনের অবদান সম্পর্কে অবহিত করা। এবারের বিশ্ব পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন’।
দিবসটি উপলক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন ভবনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্যের ওপর আলোচনা হবে। আলোচনা শেষে পর্যটন ভবনের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করবে ঘোড়ার গাড়ির র্যালি। রাজধানীর বিভিন্ন পর্যটন স্পট পরিভ্রমণ করে পর্যটন বিষয়ক প্রচারণা পরিচালনার পাশাপাশি মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করতে মাস্ক বিতরণ করা হবে।
এছাড়া বাদ্যযন্ত্রসহ ২০টি সুসজ্জিত রিকশার একটি র্যালি গুলশান-বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে প্রচারণা চালাবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
মো. মাহবুব আলী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগসহ দেশের অন্যান্য পর্যটন অংশীজনরা দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন ছাড়াও দেশের প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে আলোচনা সভা এবং শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে।
বিশ্ব পর্যটন দিবসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রতিটি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে যাত্রীদের উদ্দেশে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরতে একটি রেকর্ড করা বক্তব্য প্রচার করবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দিবসটি সম্পর্কে আকাশপথে ভ্রমণকারী যাত্রীদের অবহিত করতে ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কর্তৃক পর্যটন দিবস উপলক্ষে তৈরি করা মাস্ক বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং নভো এয়ারের যাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
এছাড়া দেশীয় এ তিনটি এয়ারলাইন্স যাত্রীদের মধ্যে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ করবে বলেও জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী।
এসএইচআর/এসএসএইচ