লুট করা স্বর্ণ পাত বানিয়ে বিক্রি হয় তাঁতীবাজারে
ঢাকার আশুলিয়ায় গত ৬ সেপ্টেম্বর ১৯টি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন ধানমন্ডির রাপা প্লাজার রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির দাবি, দেশের বিভিন্ন স্থানে লুট করা স্বর্ণালংকার গলিয়ে স্বর্ণের পাত বানিয়ে রাজধানীর পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে একটি সিন্ডিকেট। ডাকাতির স্বর্ণালংকার তাঁতীবাজারে অবৈধভাবে বেচাকেনার সুস্পষ্ট তথ্য রয়েছে সিআইডির কাছে।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে আশুলিয়ার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নয়ারহাট বাজারে ১৯টি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩০-৪০ জন সশস্ত্র ডাকাত অলংকার এবং নগদ টাকাসহ ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার টাকার লুট করে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে গত ১৫ সেপ্টেম্বর শাহানা আক্তার (২৪) নামে এক ডাকাতের স্ত্রীকে স্বর্ণ বিক্রির নগদ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৪০ টাকা ও আনুমানিক ৩-৪ ভরি স্বর্ণসহ গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে আল মিরাজ মিন্টু (৩৮) ও কামাল খান (৩৯), আনোয়ার হাওলাদার (৩৯), দেলোয়ার হোসেন খলিফা (৩৬), আব্দুর রহিম (৫৫), আল মিরাজ ওরফে মিন্টু (৩৮), কামাল খা (৩৯), মো. সাগর (৪০) এবং ডাকাতির মালামাল কেনার অভিযোগে সবুজ রায় (৩২) ও রহিমকে (৩১) গ্রেফতার করা হয়।
এর মধ্যে শাহানা, আনোয়ার, দেলোয়ার, সবুজ রায়, আ. রহিম, আল মিরাজ ও কামাল খাঁ আশুলিয়ায় ডাকাতির ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা উল্লেখ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে ঢাকার নয়াবাজার এলাকার রহিমের বাসায় অভিযান চালিয়ে আশুলিয়া থেকে লুট হওয়া ২০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৪ লাখ টাকা।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ধানমন্ডির রাপা প্লাজার রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সে ডাকাতি করে প্রায় ২০০ ভরি স্বর্ণ লুট করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আশুলিয়ার ঘটনায় গ্রেফতার সবুজ রায় ও রহিমসহ আরও ৫-৬ জন রাপা প্লাজায় ডাকাতির কথা স্বীকার করেছেন। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে নয়াবাজার এলাকার সবুজের বাসায় অভিযান চালিয়ে রাপা প্লাজা থেকে লুট হওয়া ১২ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, ডাকাতির স্বর্ণালংকার তাঁতীবাজারে অবৈধভাবে বেচাকেনার সুস্পষ্ট তথ্য রয়েছে সিআইডির কাছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লুট করা স্বর্ণের অলংকার গলিয়ে স্বর্ণের পাত বানিয়ে অবৈধ ব্যবসার একটি সিন্ডিকেট রয়েছে তাঁতীবাজারে। যা সবুজ রায় ও রহিমের জবানবন্দিতে বেরিয়ে এসেছে। তাঁতীবাজারের খাঁজা কর্পোরেশন, রাজিয়া বুলিয়ান স্টোর, সুমন বুলিয়ান স্টোরের নাম প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেইউ/এসকেডি