জাল সনদে সরকারি স্কুলে ১৭ বছর!
এসএসসি পাশের সনদপত্রে জন্ম তারিখ ১৯৮৬ সালের ২২ নভেম্বর। এমনকি ২০১৯ সালে বিএড কোর্সে ভর্তির সময়ও একই জন্ম তারিখ।
অথচ চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০০৪ সালে চাকরি নেওয়ার সময় মিথ্যা জন্ম তারিখ দেখিয়ে চাকরি নিয়েছিলেন উচ্চমান সহকারী মো. হাবিবুর। দীর্ঘ প্রায় ১৭ ধরে চাকরি করে গেলেও শেষ রক্ষা বুঝি আর হলো না।
জাল সনদের মাধ্যমে সরকারি চাকরি নেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে এলো।
দুদকের চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক ফকরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন এনফোর্সমেন্ট টিমের অভিযানে দেখা গেল, হাবিবুর ২০০৪ সালের ২৮ অক্টোবর অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদ দিয়ে এমএলএসএস পদে চাকরি নেন। যেখানে তিনি জন্ম তারিখ উল্লেখ করেন ১৯৮৫ সালের ২২ নভেম্বর।
বর্তমানে তিনি উচ্চমান সহকারী পদে চাকরি করছেন। একদিকে অষ্টম শ্রেণির জাল সার্টিফিকেট দেখিয়ে চাকরি নিয়েছেন, অন্যদিকে মিথ্যা জন্ম তারিখ উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শফি উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযানের প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, হাবিবুরের এসএসসি সনদ অনুযায়ী প্রকৃত জন্ম তারিখ ১৯৮৬ সালের ২২ নভেম্বর। তিনি ২০০৪ সালের ২৮ অক্টোবর অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদ দিয়ে এমএলএসএস পদে চাকুরি নেন। অষ্টম শ্রেণির সনদে জন্ম তারিখ উল্লেখ করেন ১৯৮৫ সালের ২২ নভেম্বর। প্রকৃতপক্ষে এসএসসির সনদ অনুযায়ী তার চাকরি যোগদানের তারিখে তার বয়স ১৭ বছর ১১ মাস ৬ দিন। অথচ সরকারি চাকরি গ্রহণের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর না হওয়া সত্ত্বেও প্রতারণামূলকভাবে জাল সার্টিফিকেট দেখিয়ে চাকরি গ্রহণ করেছেন। যা দুদকের অভিযানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত সত্যতা উদঘাটনের জন্য এ সংক্রান্ত আরও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদক টিম।
হাবিবুরের বিরুদ্ধে এছাড়াও সরকারি বাসা বরাদ্দ গ্রহণে দুর্নীতিসহ আরও কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসে ৫ বছর যাবত কর্মরত থাকাকালে স্কুল শিক্ষকদের এমপিও ও পেনশনের বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন হাবিবুর। যে কারণে শাস্তি স্বরূপ তাকে ২০১১ সালের আগস্ট মাসে কক্সবাজার বদলি করা হয়েছিল।
এদিকে, দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট শরীয়তপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগেও অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক টিম সরজমিনে অফিস পরিদর্শন করে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে। এ ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করবে দুদক টিম।
আরএম/ওএফ