ই-পাসপোর্ট আবেদনের কোন প্রক্রিয়ায় কতদিন সময় লাগে
আবেদনের পর থেকে বেশ কয়েকটি ধাপ পার হওয়ার পর একজন আবেদনকারী ই-পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন। সাধারণ আবেদনকারীদের ই-পাসপোর্ট পেতে প্রায় এক মাস সময় লেগে যায়। তবে আবেদনের পর থেকে পাওয়ার আগ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়গুলোতে নিজেদের পাসপোর্টের ‘স্ট্যাটাস চেক’ বা আবেদন প্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারেন আবেদনকারী।
একজন আবেদনকারী ই-পাসপোর্টের ওয়েবসাইট থেকে এই (https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status) লিংকে গিয়ে সহজেই স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন। অনলাইনে বাংলাদেশ পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদফতর বেশ কয়েকটি ছোট ছোট শব্দ দিয়ে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে থাকে। অনেকেরই সেগুলো বুঝতে সমস্যা হয়।
এসব শব্দ নিয়ে অধিদফতর ঢাকা পোস্টকে জানানয়, একটি পাসপোর্ট আবেদনের পর আবেদনকারীকে ১০ ধরনের স্ট্যাটাস দেখানো হয়।
>> এর প্রথমটি হচ্ছে ‘সাবমিটেড’ (Submitted)। আপনার পাসপোর্টের আবেদনটি সফল ভাবে পাসপোর্ট অফিসের ওয়েব সার্ভারে জমা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ই-পাসপোর্ট পেতে আগেই সংশোধন করতে হবে এনআইডি-জন্ম নিবন্ধন
>> দ্বিতীয় ধাপ ‘অ্যাপোয়েন্টমেন্ট সিডিউল’ (Appointment Scheduled)। এই বার্তার মানে হচ্ছে আবেদনকারীর সাক্ষাতের সময়সূচি নির্ধারণ সম্পূর্ণ হয়েছে।
>> তৃতীয় ধাপ হচ্ছে ‘এনরোলমেন্ট ইন প্রসেস’ (Enrolment in Process)। এই বার্তাটি দেখলে বুঝতে হবে আবেদনকারীর আবেদনপত্রের হার্ড কপি (ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্টসহ) পাসপোর্ট অফিসে জমা হয়েছে। আবেদনটি প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে। এই ধাপ সম্পূর্ণ হতে কমপক্ষে ১-২ দিন লাগে।
আরও দেখুন : অনলাইনে যেভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন করবেন
>> চতুর্থ ধাপ ‘পেন্ডিং এসবি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স’ (Pending SB Police Clearance)। প্রতিটি নতুন আবেদনের জন্য পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হয়। এই বার্তাটি দেখালে বুঝতে হবে আবেদনকারীর আবেদনটি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য এসবির কাছে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ তদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। এই ধাপ সম্পূর্ণ হতে কমপক্ষে ৩-১০ দিন লাগে। অনেক ক্ষেত্রে মাসখানেকের বেশি সময় লেগে যায়। তবে একজন পুলিশ অফিসার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে যতদিন সম্ভব ততদিন সময় নিতে পারবেন। তিনি পুরোপুরি সন্তুষ্ট হলেই রিপোর্ট দেন।
>> পঞ্চম ধাপ ‘পেন্ডিং ফাইনাল অ্যাপ্রুভাল’ (Pending Final Approval)। এটি পুলিশ ভেরিফিকেশনে সন্তোষজনক রিপোর্ট দেয়ার পরের ধাপ। এই বার্তা দেখলে বুঝতে হবে আবেদনটি পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালকের (এডি) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই ধাপ সম্পূর্ণ হতে কমপক্ষে ১-৪ দিন লাগে। তবে লকডাউনের কারণে প্রচুর আবেদনপত্র জমা থাকায় বর্তমানে ৮-১০ দিনও লেগে যাচ্ছে।
>> ষষ্ঠ ধাপে ‘অ্যাপ্রুভড’ (Approved) বার্তা দেখলে বুঝতে হবে অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (এডি) পাসপোর্টটি প্রিন্টের অনুমোদন দিয়েছেন। এই ধাপ সম্পূর্ণ হতে কমপক্ষে ১-৩ দিন লাগে।
আরও পড়ুন: পরিবার সঞ্চয়পত্র যেভাবে কিনবেন
>> সপ্তম ধাপে ‘পেন্ডিং ইন প্রিন্ট কিউ’ (Pending in Print Queue) বার্তাটি দেওয়ার অর্থ হচ্ছে পাসপোর্টটি প্রিন্টের জন্য পাঠানো হয়েছে, এটি প্রিন্টের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। এই ধাপ সম্পূর্ণ করতে ৩-১৪ দিন লাগে। তবে বর্তমানে পাসপোর্ট প্রিন্ট হতে মাসখানেক সময় লেগে যাচ্ছে।
>> অষ্টম ধাপে ‘পাসপোর্ট শিপড’ (Passport Shipped) বলতে বুঝায় পাসপোর্টটি সফলভাবে প্রিন্ট হয়েছে এবং তা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাঠানো হচ্ছে। এই ধাপ সম্পূর্ণ হতে ১-৩ দিন লাগে।
>> নবম ধাপে ‘পাসপোর্ট রেডি ফর ইস্যুয়েন্স’ (Passport Ready for Issuance) বলতে বুঝায় পাসপোর্টটি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এসে পৌঁছেছে। আবেদনকারী দিনের নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে গিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে যেতে পারেন।
>> দশম ধাপে আবেদনকারী পাসপোর্ট নেওয়ার পর তার মোবাইল নম্বর ও ই-মেইলে ‘পাসপোর্ট ইস্যুড’ (passport issued) ম্যাসেজ দেয়া হয়।
এআর/ওএফ