নাশকতার পরিকল্পনায় জামায়াত নেতাদের গোপন বৈঠক : পুলিশ
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং নাশকতার পরিকল্পনা করার উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
সোমবার রাতে বনানীর অফিসে গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা জানান তিনি।
উপ-কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেফতার হওয়া জামায়াতের নেতারা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। বৈঠকে তারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। গোপন সংবাদে বৈঠকের খবর জানতে পেরে তাদের আটক করা হয়।
তিনি বলেন, আটকদের মধ্যে রয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল আমিদুর রহমান আজাদ, রফিকুল ইসলাম খান, নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইজ্জত উল্লাহ, মোবারক হোসেন, আব্দুর রফ, ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত ও জামায়াত কর্মী মনিরুল ইসলাম ও আবুল কালাম।
তিনি বলেন, বৈঠক থেকে আলামত হিসেবে কিছু বই আমরা জব্দ করি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কেন তারা বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। আমরা ধারণা করছি, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নাশকতার পরিকল্পনা করা উদ্দেশ্য মিলিত হয়েছিলেন। রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড করার জন্য এটি তাদের গোপন বৈঠক ছিল।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে কী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে ডিসি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নাশতার পরিকল্পনা উদ্দেশ্যে মিলিত হওয়ার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
যে বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে ওই বাসার মালিক জামায়েতের কর্মী কি না, তিনি এ বৈঠকের বিষয়ে জানতেন কি না প্রশ্ন করা হলে ডিসি বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল তারা প্রায়ই এ ধরনের বৈঠকে মিলিত হয়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন। এর আগে, যে নাশকতাগুলো হয়েছিল, এভাবেই তারা সেগুলোর পরিকল্পনা করেন।
নিয়মিত বৈঠক ছিল নাকি বিশেষ কোনো পরিকল্পনার জন্য বৈঠক ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি নিয়মিত বৈঠক ছিল না। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তাদের কী পরিকল্পনা ছিল এবং নাশকতার পরিকল্পনা তারা কীভাবে বাস্তবায়ন করতেন, তা আমরা জানার চেষ্টা করছি।
সম্প্রতি তালেবানদের উত্থানের সঙ্গে তাদের এ নাশকতার পরিকল্পনার কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না জানতে চাইলে ডিসি গুলশান বলেন, সবেমাত্র আগস্ট মাস গেল। আগস্ট মাসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছিল দেশে ও দেশের বাইরে। তাদের এ ধরনের ষড়যন্ত্রের কোনো পরিকল্পনা ছিল কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।
আটকদের এখন কোথায় নেওয়া হয়েছে এবং তাদের কোথায় রাখা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা দায়ের হলে মঙ্গলবার তাদের আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
যারা আটক হয়েছেন তাদের পেছনে আরও কেউ জড়িত কি না, কিংবা এমন কোনো তথ্য পুলিশ পেয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিসি বলেন, আমরা তো তাদের আটক করলাম। এখন জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আমরা জানতে পারব।
এর আগে, সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ভবন থেকে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ দলটির ৯ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
এমএসি/আরএইচ/জেএস