কর্মক্ষেত্রে নারী হয়রানি, সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় সংলাপ
কর্মক্ষেত্রে নারী হয়রানি, সহিংসতা প্রতিরোধে ও শ্রম আইন সংশোধনে একটি জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডের সিআইআরডিএপিতে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপটির আয়োজন করে দেশের অলাভজনক, বেসরকারি নারী-নেতৃত্বাধীন সংগঠন কর্মজীবী নারী ও আন্তর্জাতিক সংস্থা টেরে ডেস হোমস ইতালিয়া।
‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা প্রতিরোধে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর ও শ্রম আইনের সংশোধন’ বিষয়ক এই জাতীয় সংলাপে ২০১৯ সালে কর্মজীবী নারী সংগঠনের করা ‘তৈরি পোশাক কারখানায় নারীবান্ধব ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ’ সংক্রান্ত এক গবেষণা চিত্র তুলে ধরা হয়। এটি ৩২৭টি পোশাক কারখানার ৩ হাজার ১৪ জন নারী শ্রমিকের ওপর পরিচালিত হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৭২ শতাংশ নারী শ্রমিক মৌখিক হয়রানির এবং ৬২ শতাংশ নারী শ্রমিক মানসিক হয়রানির অভিযোগ করেছেন। এছাড়াও ২১ শতাংশ নারী শ্রমিক শারীরিক হয়রানির এবং ১৪ শতাংশ নারী শ্রমিক যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের পোশাক শিল্পে কাজ করা শ্রমিকদের কর্মপরিবেশের এই চিত্র থেকে সংগঠনটি অনুমান করে জানায়, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করা নারীদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। কারণ তাদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো আইনি কাঠামো গড়ে ওঠেনি।
সংগঠনটি গবেষণা পত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, লক্ষণীয় বিষয় এই যে কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকের প্রতি সহিংসতা, হয়রানি এবং বৈষম্য একটি চলমান সমস্যা হলেও এই ঘটনাগুলো প্রকাশ হয় না। কারণ দরিদ্র শ্রমিকরা আশঙ্কা করেন যে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে তাদের চাকরি থাকবে না।
কর্মজীবী নারী সংগঠনটি মনে করে, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালের হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রম আইনের সংশোধন করা হবে নাকি কর্মক্ষেত্রে হয়রানি প্রতিরোধে নতুন একটি আইন প্রণয়ন করা হবে- এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা ঠিক করা আজ সময়ের দাবি।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষরের জানানো হয়। সংগঠনটি জানায়, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে এই কনভেনশনটি বাংলাদেশে গৃহীত হলে তা পোশাক খাতে দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।
সংলাপে কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কর্মজীবী নারীর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার। সংলাপে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিসেস তাসলিমা ইয়াসমিন।
এছাড়াও প্যানেলিস্ট ইন্টারভেশন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রেসিডেন্ট রাজেকুজ্জামান রতন ও ব্লাস্টের ডেপুটি ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট বরকত আলি।
এমএইচএস