তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী
গত ১৯ আগস্ট থেকে রাজধানীর সড়কে চলাচল করছে শতভাগ গণপরিবহন। তারপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই অধিকাংশ সড়কে দেখা দিচ্ছে যানজট। আজ সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোয় তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী যাত্রীরা।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সড়কেই কমবেশি যানজট ছিল। এছাড়া যানজটের কারণে যানবাহনের গতিও ছিল কম।
রাজধানীর উত্তরা থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত এসেছেন বেলাল হোসেন নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, উত্তরা থেকে এয়ারপোর্ট, খিলক্ষেত ওই দিকে বনানী রোডে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আর প্রতিটি সড়কে ধীরগতিতে যান চলাচল করছে। ধীরগতির কারণে বনানীর রোডে না গিয়ে নতুন বাজার পর্যন্ত এসেছি। এদিক দিয়ে গুলশান যাব।
অন্যদিকে মিরপুর থেকে আসা আলিফ পরিবহনের বাসচালক নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে কথা হয় গুলশান বাড্ডা লিংক রোডে। তিনি বলেন, প্রায় সব রাস্তায় আজ পরিবহনগুলোর ধীরগতিতে চলাচল করছে। লকডাউনের পর অর্ধেক গণপরিবহন চলাচল করে কিছু দিন, এরপর গত ১৯ আগস্ট থেকে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল করছে। এরপর থেকে প্রতিদিনই রাজধানীতে যানজট দেখা দিচ্ছে।
তুরাগ পরিবহনের একটি বাসের সহকারী (হেলপার) শহিদুল ইসলাম বলেন, অফিস টাইমে বাসে প্রচুর যাত্রী পাওয়া যায়, অন্যসময় সে তুলনায় যাত্রী কম থাকে। কিন্তু অফিস টাইমে উত্তরা থেকে রামপুরা পর্যন্ত আসতেই দীর্ঘ সময় লেগে গেল। পুরো সড়কেই ধীরগতিতে বাস চালিয়ে আসতে হয়েছে। কিছু কিছু সড়কে তীব্র যানজটও ছিল। একে যাত্রী কম এর মধ্যে আবার সড়কে ধীরগতির জন্য এক ট্রিপেই অনেক সময় লেগে যায়; আর এই ধীরগতির জন্য আগের চেয়ে আয় রোজগারও আমাদের কমে গেছে।
রাইড শেয়ারিংয়ে মোটরসাইকেল চালান হামিদুর রহমান। তিনি বলেন, এখন প্রতিদিনই রাজধানীর সড়কে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করে। আগে যেখানে বেশি ট্রিপ মারতে পারতাম এখন যানজট আর যানবাহনের ধীরগতির কারণে সময় নষ্ট হওয়ায় ট্রিপের সংখ্যা কমে গেছে।
তিনি বলেন, উত্তরার রাজলক্ষ্মী থেকে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে উত্তর বাড্ডা পর্যন্ত এসেছি একটি ট্রিপ নিয়ে। এয়ারপোর্ট রোডে অতিরিক্ত যানজটের কারণে অনেক সময় ব্যয় করতে হলো। এ সময়ে আরেকটা ট্রিপ মারতে পারতাম। আসলে ইদানিং রাজধানীর সড়কে যানবাহনের গতি কমে গেছে। এছাড়া সকালে অফিস টাইম এবং বিকেল থেকে যানজট দেখা দেয় বেশি।
এদিকে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নির্দেশনাও মানছে না অধিকাংশ পরিবহন।
শর্তে বলা হয়েছিল, আগের ভাড়ায় (৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রযোজ্য হবে না) গণপরিবহন চলবে। আগের ভাড়ার অতিরিক্ত কোনোভাবেই আদায় করা যাবে না। গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার/কনডাক্টর, হেলপার-কাম ক্লিনার এবং টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়া, যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে যানবাহনের মালিকদের। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি মেনে চলতে হবে। অন্যথায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে এসব নির্দেশনা প্রতিপালন করতে দেখা যায়নি।
এএসএস/এসকেডি