আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি আরব আমিরাত প্রবাসীদের
দ্রুত সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী যাত্রীদের জন্য শাহ আমানত, শাহজালাল ও সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে করোনার র্যাপিড টেস্ট ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন আটকে পড়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা। অন্যথায় আমরণ অনশনের মতো কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এ হুঁশিয়ারি দেন তারা। ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমার দেশ আমার মাটি’ নামক একটি সামাজিক ও কমিউনিটি সংগঠনের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১২ মে থেকে করোনা আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত ফ্লাইট যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা উপলক্ষে হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি ছুটিতে এসে আটকা পড়েন। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে করোনার সংক্রমণ কমে আসায় ইতোপূর্বে সেসব দেশের সঙ্গে ফ্লাইট যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় ৩০ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের জন্য সব প্রতিবন্ধকতা উঠিয়ে দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
তারা বলেন, বর্তমানে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকার পরও আটকে পড়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমিরাত যেতে পারছেন না। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে আমিরাতের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের বিমান বন্দরগুলোতে র্যাপিড পিসিআর টেস্টের কোনো ব্যবস্থা না থাকা। ফলে ৫০ হাজারের অধিক প্রবাসী বাংলাদেশি তাদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসা বাণিজ্য ও চাকরিস্থলে যেতে না পেরে বাংলাদেশে আটকে পড়েছেন।
আমার দেশ আমার মাটি সংগঠনের সভাপতি মো. মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিবলী আল সাদিক, ফুজেইরা যুবলীগের সভাপতি মো. ফরিদুল আলম, বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতা মো. বেলাল হোসেন, মো. ফয়সাল, মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. নজরুল, মো. দিদার, গিয়াস উদ্দিন সিকদার, কাজী সালাউদ্দিন, মো. জাবেদুল ইসলাম, মো. মোস্তফা, মো. মনির, মো. শওকত, মিঠুন কান্তি দত্ত, তপন নাগ, গৌতম দাশ, মো: আজিজ, মো. ফারুক প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, প্রবাসীদের বিশাল অংশ বাংলাদেশে আটকে পড়ায় ২৮ শতাংশ রেমিটেন্স প্রবাহ কমে এসেছে। অথচ রেমিটেন্সের ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর। সরকার চাইলে যেকোনো মুহূর্তে বিমান বন্দরগুলোতে র্যাপিড পিসিআর মেশিন বসাতে পারে। সরকার অন্যান্য প্রকল্পগুলোকে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করলেও প্রবাসীদের এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে অবহেলা করছে।
তারা বলেন, যেখানে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপালের মতো দেশে মাত্র চার দিনে র্যাপিড পিসিআর টেস্ট বসানো হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ ব্যর্থ হওয়ার কারণ কী? আর এত সহজ একটা বিষয় নিয়ে প্রবাসীদের মাঠে নামতে হবেই বা কেন?
বক্তারা অবিলম্বে বাংলাদেশের তিনটি এয়ারপোর্টে র্যাপিড টেস্ট মেশিন বসানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রবাসীদের জীবন রক্ষার্থে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন। আগামী তিন দিনের মধ্যে র্যাপিড টেস্ট মেশিন বসানোর বিষয়ে কোনো ফলপ্রসূ সমাধান না এলে বক্তারা আমরণ অনশনের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন বলে উল্লেখ করেন।
এআর/আরএইচ