ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি আবেদের ভুল স্বীকার
আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি সৈয়দ আবেদ হাসান ও সিনিয়র ম্যানেজার রাফসান রিয়াদ চৌধুরীকে রিমান্ডে দ্বিতীয় দিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ঋণ দেওয়ায় অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা স্বীকার করতে বাধ্য হন তারা। তবে, নিজেদের নির্দোষ দাবি করে সব দায় পি কে হালদারের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেন বলে দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে।
সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
গত ১৬ মার্চ ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি সৈয়দ আবেদ হাসান ও সিনিয়র ম্যানেজার রাফসান রিয়াদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে দুদক। গ্রেফতারের পর তাদের আদালতে নেওয়া হয়। পরে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২২ আগস্ট ছিল রিমান্ডের প্রথম দিন। রিমান্ডকালে আসামিদের রমনা থানায় রাখা হচ্ছে।
পি কে হালদার কেলেঙ্কারিতে গত ২৫ জানুয়ারি ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৩ শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করে দুদক।
মামলার অভিযোগে আনান কেমিক্যাল লিমিটেডের নামে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা, সুখাদা প্রোপার্টিজ লিমিটেডের নামে ৬৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, মেসার্স বর্নের নামে ৬৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, রাহমান ক্যামিকেলস লিমিটেডের নামে ৫৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ও মুন এন্টারপ্রাইজের নামে ৮৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
এর মধ্যে একটি মামলার আসামি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি সৈয়দ আবেদ হাসান ও সিনিয়র ম্যানেজার রাফসান রিয়াদ চৌধুরী। যে মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়, ওই মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ভুয়া ও অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠান আনান কেমিক্যাল লিমিটেডের নামে জাল রেকর্ডপত্র প্রস্তুত করেন। এরপর তা সঠিক হিসাবে ব্যবহার করে উক্ত অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের মালিককে ভুয়া ঋণ পেতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন। পাশাপাশি ভুয়া ঋণের কাগজপত্র প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট ঋণের গ্রহীতা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ মাধ্যমে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে ওই মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলোচিত পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে দুদক। তার কিছুদিন পর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে দুদক আরও ১৫টি মামলা করে।
আরএম/আরএইচ