পরীমণির ঘটনা বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে : মহিলা পরিষদ
নারী আন্দোলন যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিবাদে সবসময় সোচ্চার থাকে বলে মন্তব্য করেছেন নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেছেন, বর্তমানে পরীমণির ঘটনা বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টার চলছে। অভিযুক্তের বিচার আইনি ধারায় একইরকম হওয়ার কথা থাকলেও নারী হলে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়।
রোববার (২২ আগস্ট) রাতে অনলাইনে নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ডা. ফওজিয়া মোসলেম এ কথা বলেন।
আলোচনায় বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, যে জলজ্যান্ত বিষয়টি নিয়ে আজ আলোচনা হচ্ছে, তা শেষ হওয়ার নয়। এখানে অভিযুক্তের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যা হচ্ছে তা কোনোভাবেই আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তদন্ত প্রক্রিয়ায় গ্যাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একটি মামলা দায়ের হলেই একজন আসামি দোষী হয় না। বিচারের আগে কাউকে সম্মানহানী করা যায় না। এ ঘটনায় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ভায়োলেট হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মী অ্যাড. সুলতানা কামাল বলেন, আমাদের সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতার যে ঘটনা ঘটছে তাতে স্পষ্ট হয় নারীরা অনেক কঠিন অবস্থার মধ্যে বসবাস করছে। বাংলাদেশে নারীর প্রতি যে নির্যাতন হচ্ছে তা একজন নারী হিসেবে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাদের বিব্রত করছে। নারীর প্রতি বিচারহীনতার নগ্ন অবস্থা আজ প্রকাশ পেয়েছে। নারীকে মর্যাদা দেওয়া, সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এতদিন যে কাজ করা হলো তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। নারীর প্রতি যে অসম্মানজনক আচরণ করা হচ্ছে তা, কোনোভাবেই কাম্য নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি তিনি জনগণের প্রতি সঠিক আচরণ করার জন্য আহ্বান জানান।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, মূলধারার গণমাধ্যমে যেভাবে পরীমণির ঘটনা আলোচিত হয়েছে তা অত্যন্ত অমূলক। পরীমণির মানবিক মর্যাদা এখানে লঙ্ঘিত হয়েছে। সামাজিক ন্যায়বিচার সে কতটা পেল তা দেখতে হবে। তার মর্যাদাহানী করা হলো, তার অধিকার আমাদের কে দিলো সেটি দেখতে হবে। অভিযুক্তকে বারবার রিমান্ডে নেওয়া, এভাবে একজন মানুষকে হেনস্থা করা বা তাকে ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে আমরা কোনোভাবেই বঞ্চিত করতে পারি না।
আলোচনায় আরও যুক্ত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. এস. এম. এ সবুর, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, সোহরাব হাসান, বাসুদেব ধর, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, আদিবাসী নেতা সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।
এমএইচএন/জেডএস