রাজধানীর সড়কে ধীরগতি, গণপরিবহনে যাত্রীও কম
কঠোর বিধিনিষেধের পর সড়কে চলছে গণপরিবহন। ধীরে ধীরে চালু হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রসহ সব কিছু। দুই দিন ধরে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের ভিড় লক্ষণীয়। সড়কে যানবাহন চলছে থেমে থেমে। চালকদের দাবি, যান চলাচলে ধীরগতি থাকলেও পর্যাপ্ত যাত্রীর দেখা মেলেনি।
শনিবার (২১ আগাস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সকালের দিকে বাসগুলোতে পর্যাপ্ত যাত্রী থাকলেও, বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কমেছে যাত্রী। যাত্রীদের তুলনায় যানবাহনের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় সব সড়কেই যানজট আর ধীর গতি লক্ষণীয়।
আলিফ পরিবহনের বাসচালক হাবিবুর রহমান দুপুর ১২টায় তিনি বলেন, ব্যবসা একেবারেই খারাপ। একমাত্র অফিস টাইম আর অফিস শেষে যাত্রী পাই। অন্য সময় যাত্রী পাওয়া যায় না। এতদিন লকডাউনের জন্য বেকার থাকলাম। এখন চলাচল শুরু করলেও পর্যাপ্ত যাত্রী পাচ্ছি না।
আকাশ সুপ্রভাত বাসের চালক বলেন, সকালের ট্রিপে অফিসগামী বা কাজে বের হওয়া যাত্রী পাচ্ছি, কিন্তু এরপর সারাদিন তেমন একটা যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। আবার অফিস টাইম শেষে কিছু যাত্রী পাওয়া যায়। অন্য সময় যাত্রী সঙ্কট থাকছে। জমা খরচ দিয়ে লোকসানের শিকার হচ্ছি। লকডাউনের সময় পুরোপুরি বেকার ছিলাম। আর বাস চালু হওয়ার পর যাত্রী পাই না, সব লস যেন আমাদেরই।
তুরাগ বাসে উত্তরা যাচ্ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম নামের একজন যাত্রী। তিনি বলেন, সকালে যখন উত্তরা থেকে খিঁলগাও যাচ্ছিলাম তখন বাসগুলোতে পর্যাপ্ত যাত্রী দেখেছি। কিন্তু এখন বেশিরভাগ বাসে ফাঁক ফাঁকা ভাব। হতে পারে করোনার কারণে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাসে উঠছে না।
এর আগে, সড়কে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল সংক্রান্ত জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। বুধবার (১৮ আগস্ট) বিআরটিএ সদর দফতরের পরিচালক (প্রকৌশল) শীতাংশু শেখর বিশ্বাসের সই করা বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়।
করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনার আলোকে এ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিআরটিএ। এতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) থেকে সড়কে সব গণপরিবহন চলবে। এ জন্য কয়েকটি শর্ত মানতে হবে।
শর্তে বলা হয়েছে, আগের ভাড়ায় (৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রযোজ্য হবে না) গণপরিবহন চলবে। আগের ভাড়ার অতিরিক্ত কোনোভাবেই আদায় করা যাবে না। গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার/কনডাক্টর, হেলপার-কাম ক্লিনার এবং টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়া, যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে যানবাহনের মালিকদের।
শর্তে আরও বলা হয়েছে, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি মেনে চলতে হবে। অন্যথায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে বিআরটিএ। এর আগে অর্ধেক সংখ্যক গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। নতুন নির্দেশনার পর তা আর কার্যকর থাকছে না।
এএসএস/ওএফ