টার্কিশ এয়ারলাইন্সকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা
করোনা পরীক্ষার সনদ ছাড়া তিনজন যাত্রী আনায় টার্কিশ এয়ারলাইন্সকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট তিন লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট শেখ হাফিজুর রহমান।
তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে ইস্তাম্বুল থেকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের যে ফ্লাইট ঢাকা এসে পৌঁছায় সেখানে তিন যাত্রীর কোভিড-১৯ টেস্টের কোনো সনদ ছিল না। ওই তিন যাত্রী বাংলাদেশী ও একই পরিবারের সদস্য। তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে যাত্রা করে ইস্তাম্বুল হয়ে ঢাকায় পৌঁছান।
শেখ হাফিজুর রহমান জানান, ওই তিন যাত্রী যুক্তরাষ্ট্র থেকে যাত্রা শুরুর আগে চিকিৎসকের থেকে চেকআপ করিয়ে এই মর্মে সনদ নেন যে করোনার কোনো লক্ষণ তাদের নেই। কিন্তু তারা কেউ কোভিড শনাক্তকরণের জন্য বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নির্ধারিত পিসিআর টেস্ট করাননি।
বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট ছাড়া যাত্রী আনায় টার্কিশ এয়ারলাইন্সকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও কোভিড পরীক্ষা না করিয়ে যে তিন যাত্রী ঢাকায় আসেন তাদেরকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
জরিমানার কবলে যেসব এয়ারলাইন্স
গত এক মাসে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সন্তোষজনক সনদ ছাড়া বাংলাদেশে যাত্রী এনে মোট ১৫ এয়ারলাইন্সকে ২৫ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা গুণতে হয়েছে।
এর মধ্যে ৯ জানুয়ারি দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে ভারতের ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সকে, কাতার এয়ারওয়েজকে পাঁচ লাখ, করোনা সনদ ছাড়া ৫১৬ যাত্রী আনায় সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সকে (সাউদিয়া) দুই লাখ, বিমান বাংলাদেশকে ৩০ হাজার ও মালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সকে দুই লাখ ও পরীক্ষা ছাড়া লিবিয়া থেকে ১৫০ যাত্রী আনায় দেশটির বুরাক এয়ারকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া করোনা আক্রান্ত এক যাত্রী বাংলাদেশে আনায় এয়ার এশিয়াকে এক লাখ ও ইতিহাদ এয়ারওয়েজকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
বেবিচকের নির্দেশনায় যা বলা আছে
গত ৪ ডিসেম্বর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানায়, ৫ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে আসতে ইচ্ছুকদের অবশ্যই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে ফ্লাইটের সময় থেকে সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টা আগের সনদ গ্রহণযোগ্য হবে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় এ সিদ্ধান্ত নেয় বেবিচক। এছাড়া করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো যাত্রীকে বোর্ডিং পাস না দিতে নির্দেশ দিয়েছে বেবিচক।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে নতুন একটি সার্কুলারে বাংলাদেশ ত্যাগ করা যাত্রীদের জন্য কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করে বেবিচক।
সার্কুলারে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে যেসব যাত্রী শিডিউল ফ্লাইটে অন্যান্য দেশে যাবেন, তাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে পিসিআর-বেইজড কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ নিতে হবে। সার্টিফিকেটটি অবশ্যই যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে সরকার অনুমোদিত ও সরকার নির্ধারিত হাসপাতাল বা ইন্সটিটিউট থেকে সংগ্রহ করতে হবে। তবে বেবিচকের পক্ষ থেকে পরীক্ষার সময় যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে বেঁধে দেয়া হলেও যাত্রীরা নির্দিষ্ট গন্তব্য বা দেশের নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা করতে পারবেন।
এআর/ওএফ