দেশেই তৈরি হবে টিকা, যাবে বিদেশেও
দেশে সরকারিভাবে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জন (বিসিপিএস) মিলনায়তনে চীনের সঙ্গে টিকা উৎপাদনের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক টিকার প্রয়োজন। চীনের সিনোফার্মের টিকা দেশে উৎপাদন হবে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দেশেই টিকা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন। দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা অন্যান্য দেশেও টিকা রফতানি করব।
তিনি বলেন, এক কোটি টিকা আমাদের হাতে আছে। ১৩ কোটি মানুষকে (৮০ শতাংশ) দুই ডোজ করে টিকা দিতে মোট ২৬ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা নিজেরাই টিকা উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতেই বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদনে যাচ্ছে।
জাহিদ মালেক বলেন, এখন বাল্কে চীন থেকে টিকা নিয়ে আসা হবে। এখানে ফিনিশ করা হবে। পরে একটা বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে বা নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার নিয়ে নেবে ইনসেপ্টার কাছ থেকে। উৎপাদন বেশি হলে, টিকাদান বাড়ানো যাবে। দেশের চাহিদা পূরণ হলে, প্রতিবেশী দেশেও রফতানি করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেছেন, বড় আকারের বাল্ক বেশি পরিমাণে এনে লেভেলিং ও বোতলজাত করতে এ উদ্যোগ। এতে করে নিরবচ্ছিন্ন টিকা সরবরাহের নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে। এতে খরচও কম পড়বে। ভবিষ্যতে টিকা উৎপাদনের প্রযুক্তি পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
এ সময় চায়না সিনোফার্ম ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ফু ইয়াং বলেন, সহ-উৎপাদনের এ উদ্যোগে সবার জন্যে টিকার সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণ নতুন মাত্রা পাবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্বের অংশ হিসেবে ভবিষ্যতেও করোনা মহামারি মোকাবিলায় নিবিড়ভাবে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, সিনোফার্মের তিন বিলিয়ন ডোজ টিকা উৎপাদনে সব ধরনের সহযোগিতা করবে চীন। বিশ্বের ৮৭টি দেশে এ টিকা সরবরাহ করছে চীন। বাণিজ্যিক উৎপাদন হওয়ায় বাংলাদেশ সহজেই কম খরচে এ টিকা কিনতে পারবে।
ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল মুত্তাদির বলেন, এ দুর্যোগে স্থানীয় উৎপাদনের সুযোগে মানুষের টিকাপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ওষুধ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে এটি বড় অগ্রগতি। দেশীয় চাহিদা পূরণ করে প্রতিবেশি দেশগুলোতেও রফতানি করতে পারবে। প্রতি মাসে ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডোজ টিকা উৎপাদন করার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জি মিং বলেন, চীন সরকার চায়, টিকা মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে আসুক। বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু বলেই চীন বড় আকারের এ বাণিজ্যিক সহ-উৎপাদনে যাচ্ছে। টিকা উৎপাদনে বাংলাদেশের সক্ষমতা আছে।
চীনের টিকা মানবতার কল্যাণে সহযোগিতা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, টিকা প্রযুক্তি নিয়ে কারোরই রাজনীতি করা উচিত নয়। ৭০টি দেশে এভাবে চীনের টিকা উৎপাদন হচ্ছে।
টিআই/আরএইচ