মেট্রোরেল প্রকল্পে ৮৮৬ জন করোনায় আক্রান্ত
ঢাকা মহানগর ও তার আশপাশে মেট্রো রেলপথ নির্মাণে কর্মরত দেশি-বিদেশি জনবলের মধ্যে এ পর্যন্ত ৮৮৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের ৭৫ শতাংশই উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণাধীন এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পে যুক্ত।
মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয়কারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) জুলাই মাসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা মোকাবিলায় আমরা সরকারি নির্দেশনা মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এটা ঠিক যে, মেট্রোরেল প্রকল্পে নিয়োজিতদের মধ্যে করেনার সংক্রমণ আগের চেয়ে বেড়েছে। তা আবার কমে আসবে বলে আমরা আশা করছি।
তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রকল্পের কাজ যথাসম্ভব দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। চলতি আগস্ট মাসের মধ্যেই উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে রেলপথের ভায়াডাক্টের ওপর ট্রেনের ট্রায়াল শুরু করা হবে।
ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, ছোট পরিসরে উত্তরায় ডিপো এলাকার মধ্যে ট্রেনের টেস্ট রান শেষ হয়েছে। এখন ডিপো এলাকার মধ্যে ট্রেনের ট্রায়াল রান শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর ভায়াডাক্টের ওপর ট্রায়াল শুরু হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, এখন পরিচয়পত্র দেখানো সাপেক্ষে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। বহিরাগতদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সামাজিক দূরত্ব মেনে কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। তাছাড়া, প্রকল্পে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। গাবতলী কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ১০ শয্যার এবং উত্তরার পঞ্চবটি কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ১৪ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে। এরইমধ্যে প্রকল্পে কর্মরত দেশি জনবলকে অনলাইন নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে।
গত এপ্রিল মাসের অগ্রগতি প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছিল, তখন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৬১ জন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। গত এপ্রিলেই করোনায় আক্রান্ত হন ২১৯ ব্যক্তি। সেসময় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ মাঠ পর্যায়ের দুটি হাসপাতালের শয্যা বাড়ানোসহ দলবদ্ধ জনবল ২৫ থেকে নামিয়ে ১০ জন করেছিল। এখনও সেই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা হচ্ছে।
উত্তরা-কমলাপুর মেট্রোরেল প্রকল্পে প্রায় সাত হাজার বিদেশি কাজ করছেন। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পে যুক্ত ৩২১ ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হন। গত বছর আক্রান্তের হার এ বছরের চেয়ে কম ছিল।
গত বছরের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিদেশি অর্থায়নের বিভিন্ন প্রকল্পে যুক্ত বিদেশিরা নিজ নিজ দেশে চলে যান। সংক্রমণ কমে এলে তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন। মেট্রোরেল প্রকল্পে যুক্ত জাপানি ও ইতালিয় বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি অন্যান্য কর্মীরাও গত বছর সংক্রমণ শুরুর পর নিজ নিজ দেশে চলে যান। পরে সংক্রমণ কমলে গত আগস্ট থেকে তারা বাংলাদেশে ফিরে কাজে যুক্ত হন। এ বছর গত মার্চের শেষ দিক থেকে করোনায় সংক্রমণ আবারও বেড়ে যেতে শুরু করে।
পিএসডি/আরএইচ