রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট, তবুও যানজট
টানা ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর শিথিল করা হয়েছে করোনা মহামারিকালের বিধিনিষেধ। ফলে বুধবার থেকেই রাজধানীতে চালু হয়েছে গণপরিবহন। তবে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অর্ধেক সংখ্যক গণপরিবহন চলাচল করছে।
একদিকে সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা, অন্যদিকে রাস্তায় অর্ধেক গণপরিবহন চলাচল করায় সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এ সংকটের মধ্যেও রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সকাল থেকেই যানজট দেখা যাচ্ছে।
করোনা সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে গত ১ জুলাই থেকে বিধিনিষেধ শুরু হয়। তবে ঈদ উপলক্ষে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আবারও বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়। পরে তা আরেক দফা বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়। ফলে গতকাল থেকে রাজধানীতে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল করছে, তবে তা অর্ধেক সংখ্যায়।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই গণপরিবহনে সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী এবং কাজে বের হওয়া মানুষরা। তবে বাস অর্ধেক চলাচল করলেও সড়কে নেমেছে প্রচুর পরিমাণে যানবাহন, ফলে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের যানজটের।
মালিবাগ আবুল হোটেল এলাকায় কথা হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী রিয়াজ আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল থেকে শত শত মানুষ অফিসে যাওয়ার জন্য রাস্তায় দাঁড়ানো, কিন্তু গণপরিবহন সংকটের কারণে অনেকেই গন্তব্যে যেতে পারছে না। বাসগুলো আগে থেকেই আসন পরিপূর্ণ হয়ে গেট লাগিয়ে আসছে। ফলে মাঝপথের মানুষ বাসে উঠতে পারছে না। শুধু তাই নয় গণপরিবহনের সংকট হলেও অন্য সব ধরনের বিশেষ করে প্রাইভেট কারের চাপ রয়েছে সড়কে। তাই সকাল থেকে রাস্তায় যানজট দেখা যাচ্ছে।
গুলশান-১ নম্বর এলাকায় সিগন্যালে আটকে থাকতে দেখে বাস থেকে নেমে হেঁটে যাচ্ছিলেন আরেক বেসরকারি চাকরিজীবী হায়দার হোসেন। তিনি বলেন, একদিকে গণপরিবহন সংকটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর বাসে উঠেছিলাম, কিন্তু সড়কজুড়েই যানজট তাই নেমে যেতে হলো। অফিস আদালত সব খুলে দিয়ে গণপরিবহন অর্ধেক চালু করায় কাজে বের হওয়া মানুষের জন্য খুব সমস্যা হয়েছে। তারা বেশিরভাগই বাসে উঠতে পারছে না, কারণ বাসগুলো আগে থেকেই পরিপূর্ণ হয়ে আসছে। সেই সঙ্গে অন্য সব ধরনের যানবাহন সড়কে নামায় সব সড়কগুলোতেই যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
গাবতলীর দিক থেকে মহাখালী, গুলশান হয়ে কুড়িলের পর্যন্ত চলাচলকারী বৈশাখী পরিবহনের চালক মনিরুল ইসলাম বলেন, সব কিছু খুলে দিয়ে শুধু অর্ধেক সংখ্যক বাস চালু করায় সাধারণ যাত্রীদের জন্য গণপরিবহন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। সেহেতু সব বাসই যাত্রীতে পরিপূর্ণ তাই মাঝপথের যাত্রীরা আর বাসে উঠতে পারছে না। বাসের ভেতরে থাকা অন্য যাত্রীরা আমাদের সঙ্গে রাগারাগি করে, তাই বাসের গেট বন্ধ রাখতে বাধ্য করছে। তাই মাঝপথের যাত্রীরা আর বাসে উঠতে পারছে না।
’পুরো সড়কেই দেখলাম অন্যান্য যানবাহন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে অর্ধেক বাস চলার পরেও রাজধানীতে যানজট আছে। সব মিলিয়ে একদিকে গণপরিবহন সংকট অন্যদিকে যানজট নিয়ে যাত্রীদের এবং আমাদের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে’- বলেন ওই বাসচালক।
এদিকে আগামী ১৯ আগস্ট থেকে রাস্তায় শতভাগ গণপরিবহন চলাচল করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সড়ক, রেল ও নৌ পথে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে।
এএসএস/এসএম