লঞ্চ চলাচল শুরু
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেওয়া কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করায় আজ থেকে দেশে লঞ্চ চলাচল শুরু হচ্ছে। দীর্ঘ ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলাচল করবে।
এদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) এ সংক্রান্ত এক আদেশ জারি করে। সেখানে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাস্ক পরা এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারণ ক্ষমতার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে নৌযান চালানো যাবে।
এর আগে, করোনা পরিস্থিতিতে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচলের কারণে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। তবে বুধবার থেকে শতভাগ আসনে যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাই নতুন করে লঞ্চের ভাড়া বাড়ছে না।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, পুরো টার্মিনাল এলাকা জনশূন্য। লঞ্চ টার্মিনালে প্রবেশের কাউন্টারগুলো বন্ধ। টার্মিনাল পাহারায় অলস সময় পার করছেন আনসার বাহিনীর সদস্যরা। ঘাটে নোঙর করে রাখা শতাধিক লঞ্চ। বেশির ভাগ লঞ্চে চলছে ধোয়ামোছার কাজ। কোথাও আবার করা হচ্ছে নতুন রং। মেরামত করা হচ্ছে বিভিন্ন অংশ।
একটি লঞ্চের কেরানি সুমন ঢাকা পোস্টকে জানান, ১৯ দিন পর লঞ্চ আবার চলবে। তাই লঞ্চ ধোয়ামোছার কাজ করছি। ডেক, কেবিনসহ পুরো লঞ্চ স্যাভলন পানি দিয়ে ধোয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রামগতির উদ্দেশে ছেড়ে যাবে লঞ্চটি।
লঞ্চের অন্য একজন কর্মী রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘদিন লঞ্চ বন্ধ থাকায় আয়-উপার্জনের পথ বন্ধ ছিল। খেয়ে না খেয়ে দিন কেটেছে। আজ থেকে লঞ্চ ছাড়বে, ভালো সময় আসবে। লঞ্চ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। করোনা যাতে না ছড়ায়, তাই আমরা ডিটারজেন্ট ও স্যাভলন ব্যবহার করে লঞ্চ পরিষ্কার করছি।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১ জুলাই থেকে বিধিনিষেধ শুরু হয়। ফলে রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা ছাড়া সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে নৌযান পরিচালনার অনুমতি দেয় সরকার। এ সময় ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আবারও বিধিনিষেধ জারি করা হয়। এ দফায় জরুরি সেবা, গণমাধ্যম ও খাদ্য উৎপাদনে সংশ্লিষ্ট পরিবহন ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহনও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে তা আরেক দফা বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়।
এমএইচএন/ওএফ