অনলাইনে ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার, কাউন্টারে নেই ভিড়
বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় ১১ আগস্ট থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। এ জন্য দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে বা রাজধানীতে আসতে ইচ্ছুক ট্রেন যাত্রীদের আগে অনলাইনে বা কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে হবে। তবে অনলাইনে টিকিটের জন্য হা-হুতাশ বা বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও কাউন্টারে একেবারেই ভিন্ন চিত্র।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সকাল ৮টার কিছু আগে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন গিয়ে দেখা যায়, মাত্র দুটি কাউন্টারে সাধারণ চেয়ারের অগ্রিম টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ানো আছে ৩০ জনের মতো। এছাড়া এসি টিকিটের জন্য ৬টি কাউন্টারে আলাদা-আলাদা লাইনে দাঁড়িয়েছেন সব মিলিয়ে একশর মতো টিকিট প্রত্যাশী।
একটা বিষয় লক্ষ্যণীয় ছিল যে মোটামুটি সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে সচেতন ছিলেন। বেশিরভাগের মুখেই মাস্ক দেখা গেছে। রক্ষা করা হয়েছে সমাজিক দূরত্ব। কাউন্টারের সামনেও করোনাভাইরাসের বিষয়ে সচেতনতামূলক ব্যানার টাঙানো রয়েছে।
তবে সকাল ৮টা থেকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে তা হয়নি। বিক্রি শুরু হয় সকাল ৯টার পর।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনের ৫০ শতাংশ টিকিট কাউন্টার ও ৫০ শতাংশ অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। ৯ আগস্ট থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে ৩৮ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন ও ২০ জোড়া মেইল-কমিউটার ট্রেন সারাদেশে চলাচল করবে। তবে ওই দিন একতা এক্সপ্রেস, ৭২৬ সুন্দরবন এক্সপ্রেস, ৭৬৫ নীলসাগর এক্সপ্রেস, ৭৭১ রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো ঢাকা থেকে ও ৭৮৩ টঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি গোবরা থেকে ছাড়বে না।
করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে গত ২৩ জুলাই থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ২ সপ্তাহেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ট্রেন চালুর খবরে অনেকে অপেক্ষায় ছিলেন অনলাইনে টিকিট কাটার। কিন্তু সকাল থেকে অনেকে অনলাইনে চেষ্টা করেও টিকিট কাটতে পারছিলেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আবার কমলাপুর রেলস্টেশনের কাউন্টারে লাইনে যারা দাঁড়িয়ে আছেন তাদেরও টিকিট দেওয়া হয়নি সকাল ৯টা পর্যন্ত। পরে ৯টা ৫ মিনিটে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। আজকে ১৩ ও ১৪ আগস্টের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। গতদিন দেওয়া হয়েছিল ১১ ও ১২ আগস্টের।
সকাল থেকে লাইনে দাঁড়ানো কবির আহমেদ জানান, ১৩ তারিখের সিরাজগঞ্জের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছি সকাল ৮টার আগে থেকে। টিকিট ৮টার আগে থেকে দেওয়ার কথা থাকলেও ৯টায় কাউন্টার খোলে। এরপর সকাল ৯ টা ৫ মিনিটে টিকিট বিক্রি শুরু করে তারা।
এক ঘণ্টা পর টিকিট বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
টিকিটের জন্য লাইনে থাকা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, সকাল সাতটায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। ৯টা ১৫ মিনিটে টিকিট পেয়েছি। সিরিয়ালে দুই নম্বর ছিলাম। ১৪ তারিখ রংপুর যাব, টিকিট কেটেছি।
এতোদিন পর ট্রেন চালু হচ্ছে তারপরও স্টেশনের টিকিটের জন্য ভিড় নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্টেশনের এক কর্মী জানান, করোনার কারণে সবকিছু বন্ধ ছিল, ১১ আগস্ট খুলছে। এর আগে ট্রেন চালু হলেও সশরীরে টিকিট বিক্রি হয়নি, অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। তাই অনেকে জানেন না যে এখন স্টেশনে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মহামারি করোনার কারণে অনেকে ভ্রমণ করতে চাচ্ছে না। আর ঢাকা থেকে যাওয়ার চেয়ে আসার চাপ দেই বেশি থাকবে। সব অফিস খুলছে। যারা গ্রামে গিয়েছিল তারা ১১ তারিখ থেকে ঢাকায় আসতে শুরু করবে। তাই ঢাকা থেকে যাওয়ার চেয়ে আসার চাপই বেশি হবে বলে জানান তিনি।
এসআই/এসএম