গ্রেপ্তার এড়াতে দুদকে আসছেন না পি কে হালদারের সহযোগীরা
গ্রেপ্তার এড়াতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলবে হাজির হচ্ছেন না আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) সহযোগীরা। রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের দুর্নীতি সংশ্লিষ্টতায় তলব করা দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক টানা তৃতীয় দিনের মতো দুদকে হাজির হওয়া থেকে বিরত ছিলেন।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) এমটিবি মেরিন লিমিটেডে মালিক বাসুদেব ব্যার্নাজী ও ন্যাচার এন্টারপ্রাইজের মালিক পাপিয়া ব্যার্নাজীর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হওয়ার কথা ছিল।
এ বিষয়ে দুদক দুদকের জনসংযোগ (পরিচালক) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের তলব করা হয়ে থাকে। এটা আইনি প্রক্রিয়া। তবে তারা কেন হাজির হচ্ছেন না, সেটা তারাই বলতে পারবেন।
একই ঘটনায় পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, সাবেক পরিচালক আরেফিন সামসুল আলামিন, ন্যাচার এন্টারপ্রাইজ ও এমটিবি মেরিন লিমিটেডের মালিক নওশের উল ইসলাম, স্ত্রী মমতাজ বেগম এবং এমটিবি মেরিন লিমিটেডের মালিক সনজিব কুমার হাওলাদারকে গত ৫ জানুয়ারি তলব করা হলেও তারা হাজির হননি।
এদিকে তদন্ত কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ধানমন্ডির ১০ নম্বর রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে পি কে হালদারের সহযোগী ও বান্ধবী বলে পরিচিত অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেপ্তার করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সহায়তায় বিভিন্ন সময়ে পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের ৩৯টি কোম্পানির শতাধিক ব্যাংক হিসাবে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ফ্রিজ করে সংস্থাটি।
ফ্রিজ করা হিসাবের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, এফএএস লিজিং ও পিপলস লিজিং থেকে ২০১৫-২০১৯ সাল পর্যন্ত নওশের উল ইসলাম নামের ভুয়া কোম্পানির নামে থাকা ৯৫২ কোটি টাকা এবং তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের নামে লোপাট করা ২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, পি কে হালদার ওই প্রতিষ্ঠানসহ পিপলস লিজিং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) দায়িত্ব পালন করে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন।
ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। শুদ্ধি অভিযান শুরুর পরপরই তার নাম উঠে আসে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বছরের ১৪ নভেম্বর হাজির হতে নোটিশ দিয়েছিল সংস্থাটি। ৩ অক্টোবর তার বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ঠিকই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে ফেরার কথা বলেও আর ফেরেননি।
গত ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল। পি কে হালদারের প্রতারণায় সহায়তাকারী ২৪ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আরএম/এসআরএস