পরীমণি-পিয়াসাদের নিয়ে সংবাদ : শব্দচয়নে আপত্তি মহিলা পরিষদের
মহিলা পরিষদ বলছে, পরীমণি, পিয়াসা ও মৌদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে এমনভাবে সংবাদ প্রচার ও শব্দ প্রয়োগ করা হচ্ছে, যাতে দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার প্রয়াস চালানো হচ্ছে, যা সুস্থ সাংবাদিকতার পরিপন্থী।
একইসঙ্গে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই তাদের গ্রেফতার ও কয়েকটি ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি প্রচারে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
তাদের দাবি, কোনো ঘটনায় দোষীকে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার, জিজ্ঞাসাবাদের আগেই দোষী সাব্যস্ত করা বিচারের প্রতি আস্থাকে দুর্বল করে।
আজ (রোববার) মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি যে, কোনো নারী ঘটনার শিকার বা অভিযুক্ত যাই হোক না কেন, এমনভাবে সংবাদ প্রচার ও শব্দ প্রয়োগ করা হয়, যাতে নারীর আত্মমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। এই ধরনের সংবাদ প্রচার নারীর মানবাধিকার লংঘনের সামিল। অতীতেও দেখা গেছে, অপরাধের মূল কারিগরদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হয়নি, ফলে অর্থবিত্ত ও ক্ষমতার মাধ্যমে সমাজে অবক্ষয় ও অনাচার সৃষ্টি করা এবং এ ক্ষেত্রে নারী ও কন্যাদের ব্যবহার করা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে এই প্রবণতা যে নিষ্ঠুর ও ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে এই ঘটনাগুলো তারই প্রতিফলন।
মহিলা পরিষদ মনে করে, এই সকল ঘটনার হোতাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা না করলে এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে- আমরা দেখি কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আগেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, যা বিচার ও প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থাকে দুর্বল করে তোলে। আমরা লক্ষ্য করলাম, পরীমণি, পিয়াসা ও মৌদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রেও এমনভাবে সংবাদ প্রচার ও শব্দ প্রয়োগ করা হচ্ছে, যাতে দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার প্রয়াস চালানো হচ্ছে, যা সুস্থ সাংবাদিকতার পরিপন্থী।
এই ঘটনাগুলো নারীর প্রতি পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ। যখন গণমাধ্যমকে জেন্ডার সংবেদনশীল করতে নারী আন্দোলন বিশেষ ভূমিকা রাখছে, গণমাধ্যমও নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সময়ে সহযোগী ভূমিকা রেখে চলেছে, সেইসময় দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো কোনো গণমাধ্যমের ভূমিকা নারীর মানবাধিকারকে ক্ষুন্ন করছে।
অপরদিকে অভিযুক্তদের শিল্পী হিসেবে অস্বীকার করা ও শিল্পী সমিতির ভূমিকায় আমরা বিস্মিত। আমরা গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ব্যক্তি নারীর মর্যাদা ক্ষুন্ন করে ও মানবাধিকার লংঘন করে- এমন কোনো ধরণের সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাই। কারণ, বিচারের আগেই এই ধরনের সংবাদ পরিবেশন নারীসমাজের ক্ষমতায়নে বাধা সৃষ্টি করবে।
জেইউ/এমএইচএন/এনএফ