ফেব্রুয়ারিতে বেসরকারিভাবেও টিকা বিক্রি করবে বেক্সিমকো
ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ওষুধের বাজারে বিক্রির জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ডোজ কিনছে বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট হিসেবে পরিচিত ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো।
সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে এ বিষয়ক চুক্তি অনুযায়ী প্রতি ডোজ আট ডলার হিসেবে ৩০ লাখেরও বেশি টিকার ডোজ বেক্সিমকো কিনবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
বেক্সিমকোর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যারা সরকারি উদ্যোগের বাইরে ব্যক্তিগতভাবে টিকা নিতে আগ্রহী, তাদের জন্যই টিকার এই ডোজগুলো কেনা হচ্ছে।
আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারিভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। ইতোমধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বেক্সিমকোর মাধ্যমে এ বিষয়ে একটি চুক্তিও করেছে বাংলাদেশ সরকার। সেই অনুসারে জানুয়ারির শেষভাগে প্রথম চালান হিসেবে ৫০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে।
সরকারের টিকা কেনার চুক্তিপত্রে প্রতি ডোজ টিকার জন্য ৪ ডলার করে দেবে বাংলাদেশ সরকার এবং ২০২১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত টিকার যোগান দেবে সেরাম ইন্সটিটিউট। রাব্বুর রেজা জানিয়েছেন, সরকারি এবং প্রাইভেট উভয় চালানই একই সময়ে আসবে।
ব্যক্তিগতভাবে টিকা নিতে আগ্রহীদের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার প্রতি ডোজের দাম ১ হাজার ১২৫ টাকা(১৩.২৭ ডলার) নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বেক্সিমকোর সিওও জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারি থেকেই বাংলাদেশের ওষুধের বাজারে মিলবে এই টিকার ডোজ। ওই মাসে প্রথম চালান হিসেবে ১০ লাখ ডোজ টিকা আসবে।
রয়টার্সের প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার একমাত্র পরিবেশক বেক্সিমকোর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার পাশাপাশি অন্যান্য ভারতীয় টিকা প্রস্তুকারী প্রতিষ্ঠান বায়োলজিক্যাল ই এবং ভারত বায়োটেকের সঙ্গে আলোচনা করা হলেও সেরাম ইনস্টিটিউটকেই প্রাধান্য দিচ্ছে বেক্সিমকো।
তিনি বলেন,‘ বর্তমানে সেরামই আমাদের অংশীদার এবং তাদের সঙ্গেই আমরা কাজ চালিয়ে যাব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’ রয়টার্সকে এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি।
বেক্সিমকোর সিওও আরো বলেন, ‘সরকার যদি আরও টিকা চায় তাহলে আমরা অন্যান্য টিকার বিষয়েও আলোচনা করতে পারি যেগুলো নিয়ে সেরাম কাজ করছে, যদি সরকার অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বাইরে কোনো টিকা চায়।”
বিশ্বের শীর্ষ টিকা উৎপাদক সেরাম ইনস্টিটিউট ভারত সরকারের কাছে ১০ কোটি ডোজ টিকা বিক্রির পরিকল্পনা করেছে, যেখানে প্রতি ডোজের দাম রাখা হবে ২০০ রুপি (২.৭৩ ডলার) করে। এরপরে আরও দরকার হলে দাম সামান্য বাড়ানো হতে পারে।
ভারত সরকার এরইমধ্যে এক কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকার জন্য সেরামের সঙ্গে চুক্তি করেছে। নয়া দিল্লির অনুমোদন পেলে ভারতের বাজারে এক হাজার রুপি (১৩.৬৬ ডলার) করে প্রতি ডোজ টিকা বিক্রি করতে চায় সেরাম ইনস্টিটিউট।
ব্রিটিশ ওষুধ নির্মান প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রোজেনকা, রাশিয়ার গ্যাভি ভ্যাক্সিন অ্যালায়েন্স এবং গেটস ফাউন্ডেশনের পার্টনার সেরাম ইনস্টিটিউট চলতি বছর বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর জন্য ১০০ কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রোজেনকার টিকা প্রস্তুত করবে।
স্বল্প আয়ের দেশ হিসেবে চলতি বছর ডব্লিউএইচওর ‘বৈশ্বিক টিকা জোট’ থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের।
এসএমডব্লিউ