সংক্রমণ ঊর্ধ্বগামী ৪২ জেলায়, সর্বোচ্চ রাঙামাটি
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার দেশের ৪২ জেলায় ঊর্ধ্বগামী। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে রাঙামাটিতে ৪৬ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন নাটোর, পিরোজপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ শতাংশ করে।
গত ২২ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত করোনা বিষয়ক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১৫ থেকে ২১ জুলাই উল্লিখিত জেলায় সংক্রমণের যে হার ছিল তার তুলনায় ২২ থেকে ২৮ জুলাইয়ে শনাক্ত বিবেচনায় বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করা গেছে। এর মধ্যে রাঙামাটিতে এক সপ্তাহ আগে সংক্রমণের হার ছিল ৩৬ শতাংশ, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ শতাংশে। জেলাটিতে সংক্রমণ বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। একইভাবে এক সপ্তাহ আগে বান্দরবানে শনাক্তের হার ৫১ থেকে বেড়ে ৭৬ শতাংশ হয়েছে। জেলাটিতে এই সময়ে সংক্রমণ বেড়েছে ২৫ শতাংশ। শরীয়তপুরে ৪৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৪ শতাংশ; সংক্রমণ বেড়েছে ১৮ শতাংশ।
কুষ্টিয়ায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণ বেড়েছে ৪৯ থেকে ৬২ শতাংশ; জেলাটিতে সংক্রমণ বেড়েছে ১৩ শতাংশ। বরিশালে ১৫ থেকে ২১ জুলাই সময়ে সংক্রমণ ছিল ৫২ শতাংশ, গত সপ্তাহে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ শতাংশে। মাগুরায় ৩১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ২৯ শতাংশ। কুড়িগ্রামে ৩৩ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৯ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ২৬ শতাংশ। মেহেরপুরে ৩৮ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ২০ শতাংশ।
ঝিনাইদহে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণ ৪০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৬ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১৬ শতাংশ। খাগড়াছড়িতে ৪৩ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১২ শতাংশ। ভোলায় ৪২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৩ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১১ শতাংশ। নড়াইলে ৩৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৩ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১৮ শতাংশ। সিরাজগঞ্জে ৪৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৫ শতাংশ। রংপুরে ৩২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫১ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৯ শতাংশ। পটুয়াখালীতে ৩৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৯ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১১ শতাংশ।
এছাড়া সাতক্ষীরায় সংক্রমণ ছিল ২৬ শতাংশ, গত সপ্তাহে ২০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৬ শতাংশ। চট্টগ্রামে ৪০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৬ শতাংশ। মানিকগঞ্জে ৩০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১৫ শতাংশ। গাজীপুরে ৩৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৪ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৫ শতাংশ। মুন্সীগঞ্জে ৪৩ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৪ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১ শতাংশ।
কিশোরগঞ্জে ৩৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৩ শতাংশ। গাইবান্ধায় ৩০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১২ শতাংশ। নওগাঁয় ২৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪১ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১৭ শতাংশ। চুয়াডাঙ্গায় ৩০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪১, সংক্রমণ বেড়েছে ১১ শতাংশ। মাদারীপুরে ৩৩ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪১ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৮ শতাংশ। নরসিংদীতে ৩১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৯ শতাংশ। নাটোরে ৩৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১ শতাংশ।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে ৩৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৯ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৩ শতাংশ। হবিগঞ্জে ৩৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৯ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ২ শতাংশ। পিরোজপুরে ৩৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৮ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১ শতাংশ। নোয়াখালীতে ৩৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৭ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১ শতাংশ। মুন্সীগঞ্জে ২৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৭ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১০ শতাংশ। রাজশাহীতে ৩১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৭ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৬ শতাংশ। সুনামগঞ্জে ২৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৬ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৯ শতাংশ।
ঢাকায় এক সপ্তাহে সংক্রমণ ৩৩ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ২ শতাংশ। চাঁদপুরে ৩৩ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৪ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১ শতাংশ। লালমনিরহাটে ২৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৩ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৪ শতাংশ। যশোরে ২৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ৪ শতাংশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৯ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ১ শতাংশ। কক্সবাজারে ২১ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৮ শতাংশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ২১ শতাংশ, সংক্রমণ বেড়েছে ২ শতাংশ এবং জয়পুরহাটে ১২ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬ শতাংশ, জেলাটিতে সংক্রমণ বেড়েছে ৪ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশে আশঙ্কাজনকভাবে সংক্রমণ বাড়ছে। সারাদেশে যেভাবে বাড়ছে, আমরা কীভাবে এই সংক্রমণ সামাল দেব? রোগীদের কোথায় জায়গা দেব? সংক্রমণ যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে কী পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব? অবস্থা খুবই খারাপ হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। এসব বিবেচনায় আমরা লকডাউন বিধিনিষেধ বাড়ানোর সুপারিশ করেছি।
টিআই/জেডএস