৬ বছরের প্রকল্প গিয়ে ঠেকছে ১০ বছরে
‘জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ (৬৪ জেলা)’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের জুনে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয়েছে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় মহিলা সংস্থা।
এ জন্য বুধবার (২৭ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রকল্পটি তৃতীয় সংশোধনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। একনেকে অনুমোদন পেলেই প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল মেয়াদ গিয়ে ঠেকবে ১০ বছরে। অর্থাৎ ১০ বছরে এ প্রশিক্ষণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে।
একনেক কার্যপত্রে দেখা গেছে, প্রকল্পটি তৃতীয় সংশোধিত প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ উপস্থাপন করতে যাচ্ছে। এর আগে সংশোধনের জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করে। দেশের শিক্ষিত ও বেকার নারীদের কর্মসংস্থান ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টির জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, প্রকল্পটি সর্বপ্রথম ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ৫২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে একনেক অনুমোদন দেয়। কিন্তু বাস্তবায়নকারী সংস্থা এ সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় প্রথম সংশোধনের মাধ্যমে সময় ২০১৯ সালের জুন এবং ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৬০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এই সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়াতে দ্বিতীয় সংশোধনে মেয়াদ ২০২১ সালের জুন এবং ব্যয় ৮৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা করা হয়।
কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদেও এর কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তৃতীয় সংশোধনের মাধ্যমে এখন সময় আরও দুই বছর ও ব্যয় ১১৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পটির আওতায় ৪২ হাজার ২০৬ জন বেকার নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ইতোমধ্যেই ৩২ হাজার ৬০৬ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও ৯ হাজার ৬০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। প্রকল্পের প্রস্তাবিত বর্ধিত মেয়াদে অবশিষ্ট ৯ হাজার ৬০০ জনসহ অতিরিক্ত আরও ৬ হাজার ৪০০ জনসহ মোট ১৬ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছ।
প্রকল্পের আওতায় কতিপয় অংশে পরিমাণ ও প্রাক্কলিত ব্যয় বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেই সংশোধন করা হচ্ছে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- প্রশিক্ষণ প্রদান (বর্ধিত মেয়াদে প্রস্তাবিত ৬ হাজার ৪০০ জনসহ মোট ৪৮ হাজার ৬০৬ জন শিক্ষিত বেকার নারীদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে), ৬৪ জেলায় অফিস ভাড়া, কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশ, স্টেশনারি, কম্পিউটার সামগ্রী ও আসবাবপত্র ক্রয়, যানবাহন মেরামত এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ইত্যাদি।
আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেছেন, প্রকল্পটির আওতায় শিক্ষিত বেকার নারীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও আত্মনির্ভরশীলতার জন্য উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।
এসআর/ওএফ