তিল ধারণের ঠাঁই নেই ট্রেনে
প্লাটফর্মে ভিড়, ট্রেনে গাদাগাদি করে উঠছেন যাত্রীরা। বগির ভেতর নেই তিল ধারণের ঠাঁই। এভাবেই ঈদে নাড়ির টানে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ। ঈদুল আজহার আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার (২০ জুলাই) বিকেলে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেশনের প্রবেশপথ থেকে করোনার স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে যাত্রীদের প্লাটফর্মে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রবেশের পর যাত্রীরা মানছেন না সামাজিক দূরত্ব। মাস্ক দিয়ে মুখ ঢেকে রাখার কথা থাকলেও অনেকের ক্ষেত্রে তা ছিল হাতে কিংবা গলায়।
প্লাটফর্মে ট্রেন আসার পর যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই উধাও হয়ে যাচ্ছে। হুড়োহুড়ি করে যাত্রীরা ট্রেনে উঠছেন। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তোয়াক্কা না করেই বাড়ি ফিরছেন তারা।
দেওয়ানগঞ্জগামী জামালপুর কমিউটার ছাড়াও অন্যান্য ট্রেনেও একইরকম অবস্থা। টিকিট ছাড়াই অনেকে ট্রেনে উঠছেন। যদিও করোনার এ সময়ে অর্ধেক আসনে যাত্রার বিধি রয়েছে। অনেকে আবার টিকিট থাকার পরও অতিরিক্ত মানুষের চাপে ট্রেনে উঠতে পারেননি। তবে এবার ঈদযাত্রায় বেশিরভাগ ট্রেন যথাসময়ে ছেড়েছে বলে জানিয়েছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
গাদাগাদি করে ট্রেনে ওঠা এক যাত্রী জানান, আমরা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী টিকিট কেটে এসেছি। কিন্তু এখানে যে অবস্থা, টিকিট কেটেও বসার সিট তো দূরের কথা, দাঁড়ানোরই জায়গা নেই। ঈদে বাড়ি যেতে হবে তাই কিছু করার নেই এভাবেই যেতে হবে।
এদিকে বাড়তি যাত্রীদের চাপের কারণে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠতে পারেননি জামালপুরগামী যাত্রী সুমাইয়া খাতুন। তিনি বলেন, এত মানুষের ভিড়। বাচ্চা নিয়ে উঠতে পারিনি। টিকিটের টাকা অযথা নষ্ট হলো। এখন বাসেই যেতে হবে। রাস্তায় যে যানজট, আরও কত যে ভোগান্তি হবে, আল্লাহই ভালো জানেন।
অতিরিক্ত যাত্রীর ভ্রমণ বিষয়ে স্টেশনে দায়িত্বরত ট্রেন টিকিট এক্সামিনার (টিটিই) বলেন, যাদের টিকিট আছে তাদেরকেই প্লাটফর্মে প্রবেশ করতে দিচ্ছি। যাদের টিকিট নেই তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এখন ভেতরে যদি বেশি যাত্রী যান, সে বিষয়ে আমি বলতে পারব না। স্টেশন ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. মাসুদ সারোয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন পরিচালনা করছি। ঈদযাত্রার শেষ মুহূর্তে ভিড় বেশি হবে, এটাই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছি। কিন্তু অনেক যাত্রী টিকিট ছাড়াই ছাদে চেপে ভ্রমণ করছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে যতটুকু সম্ভব, চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ২৫ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে ১৫ জোড়া এবং ৯ জোড়া কমিউটার ও অন্যান্য যাত্রীবাহী ৮ জোড়া ট্রেন ঢাকা ছেড়েছে
এসআই/পিএসডি/আরএইচ