ভাটারার গৃহকর্মী নির্যাতনকারী গ্রেফতার, ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
রাজধানীর ভাটারা এলাকায় গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত আসাদুর রহমানকে (৩৯) গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ভাটারা থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে ২ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল ভূঁইয়া জানান, আমরা আজ আসামিকে আদালতে পাঠিয়েছিলাম। আমরা আদালতের কাছে আসামির সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছিলাম। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাতে নির্যাতিত গৃহকর্মী কুলসুম আক্তারের বোন ফাতেমা বেগম ভাটারা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘গৃহকর্মীর পিঠজুড়ে খুন্তির ছ্যাঁকা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মামলার বিষয়ে ফাতেমা বলেন, আমার বোনকে নির্যাতনের ঘটনায় আসাদুর রহমান ও তার স্ত্রী মাহফুজা রহমানকে আসামি করে ভাটারা থানার মামলা দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভাটারা থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) পীযুষ কুমার সরকার বলেন, ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত সংবাদটি পুলিশের নজরে আসা মাত্রই আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করি। রাতেই আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করি। পরে আমরা তাকে আদালতে পাঠাই। আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তাকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নির্যাতিতার বোন ফাতেমা বেগম জানান, আমার বোন আট মাস আগে তাদের বাসায় কাজে যায়। ছয় হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা থাকলেও তিন মাসে আমাদের পাঁচ হাজার টাকা করে দিয়েছে। এখনো অনেক টাকা পাই। তারা আমার বোনকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। এভাবে কোনো সভ্য মানুষ নির্যাতন করে? গৃহকর্তা ও তার স্ত্রী মিলে আমার বোনকে খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়েছে। গতকাল রাতে বোনকে আমার কাছে দিয়ে চলে যায়।
আহত কুলসুম আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আট মাস ধরে তাদের বাসায় কাজ করছি। কাজ করতে একটু দেরি হলেই আমাকে মারপিট করত। বিভিন্ন সময় গরম পানির ছ্যাঁকা এবং খুন্তি গরম করে ছ্যাঁকা দেওয়া হতো। তারা আমার মাথা দেয়ালের সঙ্গে আঘাত করত। তাদের বাসায় যাওয়ার পর থেকেই আমাকে নির্যাতন করত। আমি অনেকবার পালাতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। বুধবার কুড়িল বিশ্বরোডে ওভার ব্রিজের নিচে আমার বোনের কাছে দিয়ে যায় তারা। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমি আগে পালাতে পারলে এত নির্যাতনের শিকার হতাম না।
এসএএ/ওএফ/জেএস