তদন্তের প্রথম মোড়ে উত্তেজক ট্যাবলেট-অন্যের ইন্ধনের খোঁজে পুলিশ
• ধর্ষণ করা হয়েছে, অভিযোগ আনুশকার বাবার
• পারস্পরিক সম্পর্ক ও সম্মতির ভিত্তিতে মেলামেশা, দাবি অভিযুক্ত দিহানের
• মামলা হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে
• কোচিংয়ের পেপার আনতে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়েছিল আনুশকা
• দিহানকে ১০ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ
• ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে, অভিযোগ ডিসি সাজ্জাদের
রাজধানীর কলাবাগানে বন্ধুর বাসায় ইংরেজি মাধ্যমপড়ুয়া স্কুলছাত্রী আনুশকা নূর আমিনের মৃত্যুঘটনায় তদন্ত কোন পথে যাচ্ছে? আনুশকার বাবার অভিযোগ ধর্ষণ করা হয়েছে তার মেয়েকে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ইফতেখার ফারদিন দিহান বলছেন, পারস্পরিক সম্পর্ক ও সম্মতির ভিত্তিতে মেলামেশা হয় তাদের। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আনুশকা অজ্ঞান হয়ে গেলে ঘাবড়ে যান দিহান। পরে নিজের গাড়িতে করে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আনুশকাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ বলছে, ধর্ষণে অভিযুক্ত দিহান কোনো ধরনের উত্তেজক কিছু খেয়েছিলেন কি না এবং হত্যা ও ধর্ষণে অন্য কারও ইন্ধন, সহযোগীতা ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আনুশকা দিহানের বাসায় গিয়েছিলেন। দিহানের বাসা কলাবাগানে। এখানে আসার পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অভিযুক্ত দিহানের ভাষ্যমতে, আনুশকাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করার আগেই মৃত বলে ঘোষণা করে।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে গিয়ে আমরা লাশ উদ্ধারসহ দিহান নামের ওই ছেলেকে আটক করি। তাকে হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও সম্মতির ভিত্তিতে মেলামেশা হয়। এরপর ওভার ব্লিডিং হয়, এ কারণে আনুশকা সেন্সলেস হয়। তখন তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ডিসি সাজ্জাদ বলেন, মূলত এটুকুই। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভিত্তিতে প্রমাণ সাপেক্ষ তাদের দৈহিক মেলামেশার বিষয়টি। এর বাইরে অন্য কোনো কেমিক্যাল বা ট্যাবলেট জাতীয় কিছু ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, সেটি পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় আনুশকার বাবা মো. আল আমিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার (০৮ জানুয়ারি) রাতে কালবাগান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তিনি মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ৬। মামলায় তার অভিযোগ, মেয়েকে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে।
মামলায় দিহানকে আসামি করা হয়েছে। আগেই আটক করা দিহানকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এরপর তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, এ ঘটনাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্যখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদেরকে বিনীত অনুরোধ করতে চাই, তার পরিবার বুঝে-শুনে মামলা করেছে। এরপরেও এর সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
ডিসি সাজ্জাদ বলেন, ধর্ষণ হয়েছে কি না তা তদন্তের ব্যাপার, পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ডাক্তারদের অনুরোধ করা হয়েছে, ধর্ষণ হয়েছে কি না বা অন্যকিছু প্রয়োগ করা হয়েছে কি না। ডেকে নেওয়া হয়েছে কি না মামলাতে উল্লেখ নেই বা তার বন্ধুও স্বীকার করেনি। অনুমান করি, তাকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। সুরতহালে শরীরে অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।
জেইউ/এনএফ/এইচকে