কুকুরের ধাওয়া খেয়ে মায়ের কাছে ফিরে শিশুর মৃত্যু
রাজধানীর মুগদা থানার মানিকনগর পুকুর পাড় এলাকায় বাবাকে ডাকতে গিয়েছিল প্রতিবন্ধী শিশু মিশাল (১২)। এ সময় একটি কুকর তাকে তাড়া করে। কুকুরের ধাওয়া খেয়ে দৌড়ে মায়ের কাছে ফিরে অচেতন হয়ে পড়ে সে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বুধবার (১৬ জুন) বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা-মা। কিছুতেই যেন কান্না থামছে না তাদের কান্না। জানা গেছে, বুধবার (১৬ জুন) বেলা ২টায় বাসা থেকে বাবাকে ডাকতে গিয়ে কুকুরের ধাওয়া খেয়ে বাসায় ফিরে মাকে জড়িয়ে ধরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে মিশাল। প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বিকাল ৪টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মিশালের মা মিথিলা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার একমাত্র ছেলে মিশাল। সে বাক প্রতিবন্ধী বিজয়নগর বধির স্কুলের ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ে। আমি গোসলে গিয়েছিলাম। আমার ছেলে আমাকে ইশারায় বলল বাবাকে খেতে ডাকতে যাই। পরে সে বাসা থেকে বের হয়। কিছুক্ষণ পরে সে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে অচেতন হয়ে পড়ে। তাড়াতাড়ি তার বাবাকে ডেকে এনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাবা আকাশ মাহমুদ জানান, আমার একটা মোবাইল রিচার্জের দোকান আছে। এলাকায় আমার ছেলেকে সবাই আদর করে। বাসার পাশে পুকুরপাড়ে আমার দোকান। দুপুরে খাওয়া জন্য আমার ছেলে আমাকে ডাকতে বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু আমার কাছে সে যায়নি। পরে কুকুরের ভয়ে সে বাসায় এসে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। আমার বাবা তো আর চোখ খোলে না। সে আর কোনো দিন চোখ মেলবে না বলে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, মুগদা থানা এলাকায় এক শিশু ভয়ে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।প্রাথমিকভাবে জানতে পারি, কুকুরের ধাওয়ায় সে মাকে জড়িয়ে ধরে অচেতন হয়ে পড়ে।
মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মনতোষ বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাইনি। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, সে বাক প্রতিবন্ধী ছিল। বাসা থেকে বের হয়ে কুকুর দেখে মাকে জড়িয়ে ধরে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে সে মারা যায়। তবে আমরা বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখছি।
এসএএ/এসকেডি