কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন সেই নিরপরাধ মিনু
চট্টগ্রামে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তারের হয়ে জেল খাটা নিরপরাধ মিনু প্রায় ৩ বছর পর চট্টগ্রাম কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
বুধবার (১৬ জুন) বিকেল ৪টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। মিনু আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেল ৪টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। পরে স্বজনদের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যান মিনু।
মিনু আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ ঢাকা পোস্টকে আরও বলেন, আদালত আজকে মামলার মূল আসামি কুলসুমা আক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। পাশাপাশি পুলিশকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে হাইকোর্টের আদেশের পরে মিনু আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ চট্টগ্রাম আদালতে তার মুক্তির জন্য আবেদন করেন।
বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত মিনুকে মুক্তির আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, মোবাইল ফোন নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে ২০০৬ সালের ৯ জুলাই চট্টগ্রাম নগরের রহমতগঞ্জ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পোশাককর্মী কোহিনুর বেগমকে হত্যা করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর এ মামলার রায়ে আসামি কুলসুমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। রায়ের দিন কুলসুম আদালতে অনুপস্থিত থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
প্রকৃত আসামি কুলসুম আক্তার মামলার সাজা হওয়ার আগে ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন। সাজা ঘোষণা হওয়ার পর ২০১৮ সালের ১২ জুন কুলসুম সেজে মিনু আক্তার কারাগারে আসেন। চলতি বছরের ২১ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পক্ষ থেকে আদালতে একটি আবেদন করা হয়। এই আবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে কারাগারে পাঠানো আসামির সঙ্গে প্রকৃত আসামির মিল নেই। এছাড়া কারা রেজিস্ট্রারে থাকা দুজনের ছবির মিল নেই।
এ আবেদনের শুনানি শেষে কারাগারে থাকা মিনুকে আদালতে হাজির করে তার জবানবন্দি নেওয়া হয়। তখন তিনি জানান, তার নাম মিনু, তিনি কুলসুম নন।
আদালত কারাগারের রেজিস্ট্রারগুলো দেখে হাজতি আসামি কুলসুম ও সাজাভোগকারী আসামির চেহারায় অমিল খুঁজে পান। তখন আদালত কারাগারের রেজিস্ট্রারসহ একটি নথি হাইকোর্ট বিভাগে আপিল নথির সঙ্গে সংযুক্তির জন্য পাঠিয়ে দেন।
পরে হাইকোর্ট গত ৭ জুন নিরপরাধ মিনুকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
কেএম/এসএম