‘বাংলাদেশের ভ্যাকসিন পেতে ভারতের পক্ষ থেকে বাধা নেই’
ভ্যাকসিন পেতে ভারতের পক্ষ থেকে কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
বৃহস্পতিবার (০৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
করোনার ভ্যাকসিন বাংলাদেশের পেতে, ভারতের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। তবে ঠিক কখন আসবে স্পষ্ট করে বলার সুযোগ নেই
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উৎপাদনের ওপর নির্ভর করবে, কতটা দ্রুত দেওয়া যাবে। মানবতার সেবায় ভারতের ভ্যাকসিন। জরুরি ব্যবহারের জন্য প্রতিবেশী বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পাবে। এ নিয়ে ভারত আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে বলেও জানান ভারতীয় হাইকমিশনার।
এসময় সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সর্ম্পক অনন্য উচ্চতায় ছিল, এখনো আছে।
সহযোগিতা কিভাবে বাড়ানো যায় এবং ভূমি সংস্কার ও ডিজিটাইজেশনের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেন পারস্পরিক সহযোগিতা কিভাবে ধরে রেখে এগোনো যায়।
মঙ্গলবার (০৫ জানুয়ারি) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, স্থানীয়ভাবে তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজারে আনার দুই সপ্তাহের মধ্যে রপ্তানি শুরু করবে ভারত। একইসঙ্গে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে ভ্যাকসিনের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার যে খবর বেরিয়েছে সেটি নাকচ করে দিয়েছেন দেশটির এই কর্মকর্তা।
বিশ্বে ভ্যাকসিনের যে চাহিদা রয়েছে তার প্রায় ৬০ শতাংশই উৎপাদন হয় ভারতে। দেশটি থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের রফতানি শুরুর অধীর অপেক্ষায় রয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ।
গত সোমবার (০৪ জানুয়ারি) বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সেরামের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছে যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আমাদের দেশ থেকে অনুমোদন পাওয়ার এক মাসের মধ্যেই ভ্যাকসিন পেয়ে যাব।
ওইদিন সন্ধ্যায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার টিকা জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও উপ-পরিচালক আইয়ুব হোসেন সে সময় ঢাকা পোস্টকে বলেন, সন্ধ্যায় আমাদের ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমরা এই ভ্যাকসিনের সব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেছি এবং ভ্যাকসিনটি জরুরি ব্যবহারের বিষয়ে একটি অনাপত্তিপত্র (এনওসি) জারি করেছি।
ভ্যাকসিন নিয়ে জটিলতা শুরু যেভাবে
গত রোববার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান আদার পুনাওয়ালার সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, আগামী দুই মাসে সেরাম ভারতের টিকার চাহিদা পূরণ করবে। ভারত সরকারকে প্রাথমিকভাবে ১০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহের পরই টিকা রপ্তানি করা সম্ভব হতে পারে। ওই সাক্ষাৎকারের পর শুরু হয় টিকা রপ্তানি নিয়ে বিভ্রান্তি। বাংলাদেশেও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। কারণ ওই টিকা কেনার জন্য সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তি করা হয়েছে।
এ নিয়ে বিভ্রান্তি চলার পর মঙ্গলবার এক টুইটে ভিন্ন কথা বলেন আদার পুনাওয়ালা। টুইটে তিনি লেখেন, জনমনে বিভ্রান্তি দেখা দেওয়ার কারণে আমি দুটি বিষয় স্পষ্ট করছি; সব দেশে টিকা রপ্তানির অনুমোদন আমাদের দেওয়া হয়েছে এবং ভারত বায়োটেক সম্পর্কিত সাম্প্রতিক যেসব ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করতে প্রকাশ্যে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে।
এসএইচআর/জেডএস