দুই গ্রামের ১৩৫ জন বিকাশ প্রতারণায় জড়িত
বিকাশ প্রতারক চক্রের দুজনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন- মিঠুন কুমার বালা (২৬) ও হামিদুল মোল্লা (২২)। উভয়ই মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার বাসিন্দা। শুধু তারা দুজনই নন এই উপজেলার দুই গ্রামের ১৩৫ জন বিকাশ প্রতারণায় জড়িত।
সোমবার (১৪ জুন) চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দুই প্রতারককে গ্রেফতারের তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ সালাম কবির।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতারক চক্রের সদস্যরা স্মার্টফোনের ক্যামেরা চালু করে বিভিন্ন বিকাশ এজেন্টের দোকানে গিয়ে কৌশলে লেনদেন বইয়ের ভিডিও ধারণের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। পরবর্তী সময়ে ভিডিও দেখে বিভিন্ন গ্রাহকদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে বিকাশ প্রতিনিধি সেজে সেসব নম্বরে কল দেন এবং কৌশলে পিন নম্বর সংগ্রহ করেন। পরে বিকাশ অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ আত্মসাৎ করে থাকে চক্রটি।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহ মো. আব্দুর রউফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাধারণত বিকাশ প্রতারক সিন্ডিকেটে ছয় থেকে ১০ জনের মতো সদস্য থাকেন। এ রকম একটি গ্রুপের সন্ধান পেয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল, জুনের ১ তারিখ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড ও হালিশহর এলাকার বিকাশ ব্যবহারকারী গ্রাহকরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। তখন আমরা ভুক্তভোগীদের তথ্য বিশ্লেষণ শুরু করি। তাদের বিকাশের টাকাটা কোথায় যাচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করি। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখতে পাই টাকা মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার গোয়ালদাহ ও মহেশপুর গ্রামে যাচ্ছে।
তখন গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গোয়ালদাহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিকাশ প্রতারক দলের প্রধান মিঠুন কুমার বালাকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কয়েকজনের নাম বলেন। তার মধ্যে হামিদুল নামে একজনকে চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
হামিদুল বিভিন্ন বিকাশ এজেন্টের দোকানে গিয়ে রেজিস্ট্রার খাতা থেকে তথ্য ছবি তুলে বা ভিডিও করে প্রতারকদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। এরপর প্রতারক চক্রের লোকজন নম্বর দিয়ে বিকাশ অফিসের লোক সেজে ফাঁদে ফেলতেন লোকজনকে। পরে পাসওয়ার্ড নিয়ে বিকাশের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতেন।
আব্দুর রউফ বলেন, মিঠুন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তার গ্রুপে সাত-আটজনের মতো সদস্য আছে। গোয়ালদাহ ও মহেশপুর গ্রামে এরকম ছোট ছোট অনেক গ্রুপ আছে। যাদের বয়স ১৫ থেকে ৩০ বছর। সংশ্লিষ্ট থানা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গোয়ালদাহ ও মহেশপুর গ্রামে ১৩৫ জনের মতো লোক আছেন যারা সারা বাংলাদেশে এই ধরনের প্রতারণা করে থাকে। আর তাদের ডাটা কালেকশনের এজেন্ট সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, যারা মোবাইলে অর্থ লেনদেনের এজেন্ট, তাদের বলব রেজিস্ট্রারে যখন নম্বর লিখে রাখেন, তা যেন সবার সামনে না লিখেন। যাতে অন্য কেউ ছবি তুলতে বা ভিডিও না করতে পারেন দুজনকে গ্রেফতারের পর চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
কেএম/আরএইচ