পরিকল্পনামন্ত্রী বললেন ‘অভাব শুধু সততার’
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বর্তমানে আমাদের কোনো কিছুর অভাব নেই। শুধু অভাব রয়েছে সততা ও দায়িত্বশীলতার।
রোববার (১৩ জুন) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু’তে ‘পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং’-এর চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই। মাঝে মাঝে সততা, দায়বদ্ধতা ও জাতির প্রতি দায়িত্বশীলতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। নিজেদের নদী-নালা, খাল-বিল, পাহাড় সবই নিজেদের আয়ত্তে আনতে হবে। এজন্য বহিরাগত আনার চিন্তা করার দরকার নেই। প্রধানমন্ত্রী পায়রা নামটি দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর মতোই তার ক্ষিপ্রতা, সময়ের শক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞানের শক্তি কাজে লাগিয়ে বাঙালিকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছে সরকার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে পেশার স্বাধীনতা দিয়েছেন তারই একটি উদাহরণ হচ্ছে আজকের চুক্তি। এই বন্দরটি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা আগামীতে সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কাজ করে যাব। দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ফলে দেশের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারি বিশ্বখ্যাত বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডে নুল-এর সাথে একটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ চুক্তি করেছিলাম। যাতে বিদেশি অর্থায়নের মাধ্যমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রীর চুক্তির অর্থায়নের ধরন পরিবর্তন করে নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে প্রকল্পটি সম্পাদন করার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে বিদেশি কোম্পানি জান ডে নুল জি সঙ্গে নেগোশিয়েশনের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান অনেক বেশি শক্তিশালী এবং প্রকল্পের অত্যাবশ্যাকীয় অংশগুলো রেখে কার্যকরী নেগোশিয়েশনের ফলে প্রকল্পের ব্যয় কমে ৪ হাজার ৯৫০ কোটি দাঁড়ায়। অর্থাৎ ৫৩ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর আস্থা অর্জনের জন্য দ্রুত প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করা।
ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, সুষম উন্নয়নে এই বন্দর বিশেষ ভূমিকা রাখবে। কাজটি দ্রুত শেষ কাজ করতে হবে। দেশের সম্পদ কীভাবে কাজে লাগাতে হয় সেটি দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পায়রা বন্দরের ড্রেজিংয়ে অর্থায়নের এই পুরো প্রক্রিয়াটি নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সবাই মিলে কাজ করায় প্রকল্পের কাজ ঠিক থাকলেও ব্যয় অনেক কমেছে। এটিও একটি উদাহরণ। যথাসময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ড্রিম চাইল্ড হচ্ছে এই প্রকল্প। ফান্ড গঠনের মাত্র তিন মাসের মাথায় পায়রা ড্রেজিং প্রকল্পের রিজার্ভের অর্থে কার্য বাস্তবায়নে চুক্তি হলো। অন্যের কাছ থেকে অর্থ নিলে সুদ বেশি দিতে হয়। অর্থ ছাড়ে জটিলতা থাকে, নানা শর্তও পালন করতে হয়। কিন্তু এখন আমরা নিজেদের অর্থেই বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করব। এতে জাতি হিসেবে আমাদের আস্থা, যোগ্যতা ও বিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। এই দিনটি ঐতিহাসিক। দক্ষিণ এশিয়ায় অন্য কোনো দেশে এমন নজির নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই ড্রিম চাইল্ড বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।
এসআর/এইচকে