টিকা নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি
সিনোফার্মের টিকা কেনা নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে সেটায় বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো ঘাটতিও হয়নি।
রোববার (৬ জুন) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে আসেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ইগনাতভ। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মোমেন এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি। আমরা বলেছি, টিকা কিনতে চাই এবং তোমরা কোনো বাধা ছাড়াই জোগান দাও। চীন আমাদের বলেছে, তারা কোনো বাধা ছাড়াই টিকা সরবরাহ করবে। এখনও সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
টিকা নিয়ে ঢাকা-বেইজিংয়ের সম্পর্কে কোনো ঘাটতি দেখা দিয়েছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘সম্পর্কের কোনো ঘাটতি হয়নি। যেসব ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, তাতে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো ঘাটতিও হয়নি। সম্পর্ক আগের মতই আছে।’
চীনের সঙ্গে টিকার যৌথ উৎপাদন প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘আমি এটা বিস্তারিত বলতে পারব না। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাদের দেশ থেকে সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য দল আসবে। তারা এসে সরেজমিনে দেখে বিষয়টি চূড়ান্ত করবে।’
দেশে চীনের টিকা কবে আসছে এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের টিকা দ্রুত আসবে। তবে বিস্তারিত আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। আমরা সম্পর্ক তৈরি করে দিয়েছি এবং এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে। কখন আসবে, কতটুকু আসবে, কোথায় আসবে এগুলো আমরা জানি না।’
রাশিয়ার টিকা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি হবে। তবে কখন হবে, সেটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। আমরা লাইন করে দিয়েছি, বাকিটা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাজ। ক্রয় এবং যৌথ উৎপাদনের ক্ষেত্রে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। এখনও হয় নাই, আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্র থেকে করোনার টিকা দ্রুত আসবে জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘সুসংবাদ হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের টিকা দেবে। কখন দেবে এখনই বলতে পারছি না। আশা করছি, খুব শিগগিরই তারা আমাদের টিকা দেবে। কী পরিমাণ টিকা যুক্তরাষ্ট্র দিবে সঠিক সংখ্যাটা বলে নাই।’
গত ২৭ মে মন্ত্রীসভার ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি সিনোফার্মের টিকা কেনার প্রস্তাবে সম্মত হয়। এর পরপরই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আখতার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে টিকার দাম প্রকাশ করেন।
এরপর চীন থেকে ১০ ডলার করে দেড় কোটি ডোজ করোনার টিকা কেনার কথা থাকলেও সেটি নিয়ে নতুন সংকট তৈরি হয়। বাণিজ্যিক স্বার্থে দাম না প্রকাশ করার শর্ত দেওয়ার পরও এ তথ্য প্রকাশ করায় চীন বাংলাদেশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বিষয়টিকে অনিচ্ছাকৃত ভুল দাবি করে বেইজিংয়ের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বিস্তারিত জানিয়ে চীনকে চিঠিও লিখেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে এখন পর্যন্ত বেইজিং থেকে কোনো বার্তা আসেনি বলে তথ্য দেয় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম। এরইমধ্যে শনিবার (৫ মে) ঢাকায় নিযুক্ত চীনের ডেপুটি চিফ অব মিশন হুয়ালং ইয়ান তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে জানান ভিন্ন তথ্য। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত সিনোফার্মের সঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো চুক্তি হয়নি।
এনআই/এমএইচএস