বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি
পুরান ঢাকার প্রাণ-প্রকৃতি এবং পরিবেশের ওপর বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের গুরুত্ব বিবেচনায় বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রীয়ভাবে এই নদীকে পুনরুদ্ধারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবে এর কোনো কাজ হয়নি। তাই বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধারে শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ।
শনিবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নবাবগঞ্জ পার্ক সংলগ্ন বেড়িবাঁধে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্বজুড়ে ভারসাম্য হারানো প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকার জানিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এ বছর পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। আদিকাল থেকেই পুরান ঢাকার প্রাণ-প্রকৃতি, অর্থনীতি এবং পরিবেশের অপরিহার্য অংশ ছিল বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল। যা এই অঞ্চলের মানুষ এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য স্বচ্ছ পানি, নির্মল বাতাসসহ পরিবেশ সজীব রাখার সব
উপাদানের জোগান দিত। পুরান ঢাকার বেশিরভাগ মানুষ জীবন-জীবিকার জন্য নির্ভরশীল ছিল এই আদি চ্যানেলের ওপর। কালের আবর্তে প্রশাসনের অবহেলায় দখলে-দূষণে এক সময়ের প্রমত্ত আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল মৃতপ্রায় একটি আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
তারা আরও বলেন, বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে একসময় লঞ্চ, পণ্যবাহী বড় বড় ট্রলার-নৌকা চলত, জেলেরা দল বেঁধে মাছ ধরত। এই অঞ্চলে মানুষের দৈনন্দিন স্বচ্ছ পানির যোগান দিত এই নদী। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে ক্রমবর্ধমান দূষণ ও অব্যাহত আগ্রাসনের ফলে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলটি দখল হয়ে ছোট হতে হতে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ ভূমিকা না থাকায় বেপরোয়া দখল-ভরাটের কারণে চ্যানেলটি এখন মৃতপ্রায়। এক সময় প্রবাহমান থাকলেও এখন বসতি, শিল্প-কারখানা, নির্মাণ সামগ্রী, হাসপাতাল বর্জ্য ফেলে পুরো চ্যানেলকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করেছে, যা অত্র এলাকার পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। একদিকে বর্জ্য ফেলে ভরাট অপরদিকে সেই বর্জ্য পুড়িয়ে দূষণ করা হচ্ছে আদি চ্যানেল এলাকার মাটি, পানি এবং বাতাসকে। প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের কারণে এসব ক্ষতিকর রাসায়নিক ঢাকাবাসীর দেহে কোন না কোনভাবে প্রবেশ করছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক জি. এম রোস্তম খান, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সহ-সভাপতি মো. সেলিম, তৌহিদুল ইসলাম মতিন, সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি জাহাঙ্গীর আদেল, নিরাপদ চিকিৎসা চাই সংগঠনের মহাসচিব উম্মে সালমা প্রমুখ।
এমএইচএন/জেডএস