আজকের জলজটে অতীতের মতো নাজেহাল হতে হয়নি : তাপস
রাজধানীতে আজ (মঙ্গলবার) সকালে প্রায় তিন ঘণ্টা মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৮৫ মিলিমিটার। এতে ররাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। এতে পথে বের হয়ে বিপত্তিতে পড়তে হয় মানুষকে। তবে দক্ষিণ সিটির মেয়র তাপস বলছেন, আজ যে জলজট হয়েছে তাতে নগরবাসীর দুর্ভোগ আগের চেয়ে কম হয়েছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর ওয়াসার দায়িত্বে থাকা সব নালা ও খাল দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকেই খালের বর্জ্য অপসারণ এবং দখলমুক্ত করে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করে আসছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু আজকের বৃষ্টির পর জলাবদ্ধতায় পুরোনো সেই ভোগান্তির চিত্রই ধরা পড়ে।
এই জলাবদ্ধতা নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মমর্তা আবু নাছেরের মাধ্যমে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। মেয়র বলছেন, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ওয়াসার কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর ২ জানুয়ারি থেকে জিরানি, মান্ডা, শ্যামপুর, কালুনগরসহ খালগুলোর শাখা-প্রশাখা এবং পান্থপথ ও সেগুনবাগিচা বক্স কালভার্ট থেকে আমরা বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করেছি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এসব খাল ও বক্স কালভার্ট থেকে ১ লাখ ৩,৫০০ মেট্রিক টনের বেশি বর্জ্য ও ৬ লাখ ৭৯ হাজার মেট্রিক টন পলি অপসারণ করেছি। এছাড়াও ওয়াসার কাছ থেকে বুঝে পাওয়া অচল দুটি পাম্প স্টেশনের তিনটি পাম্প মেশিন সচল করতে সক্ষম হয়েছি এবং বাকি তিনটি সচল করতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও ওয়াসার কাছ থেকে পাওয়া বদ্ধ নর্দমা ও আমাদের উন্মুক্ত নর্দমাগুলো পরিষ্কারের কাজ চলমান রয়েছে এবং এই জুনের মধ্যেই তা শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
তাপস বলেন, আজ সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত এই ৩ ঘণ্টায় ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, বেশ কয়েকটি জায়গায় জলজট হলেও বিগত সময়ের জলজটের পরিমাণ ও স্থানের সংখ্যার তুলনায় তা অনেকাংশেই কম। বিগত ৫ মাসে আমাদের গৃহীত কার্যক্রম এবং আজ সকাল থেকে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঠ পর্যায়ে তৎপরতার কারণে বৃষ্টির পানি দ্রুততার সাথে নেমে যায়। সেজন্য আমি আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, সাধারণত কোনো স্থানে তিন ঘণ্টার বেশি পানি জমে থাকাকে জলাবদ্ধতা হিসেবে চিত্রিত করা হয়। আজকের বৃষ্টিতে আমরা ৩ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় শতভাগ পানি নিষ্কাশন করতে সক্ষম হয়েছি। যদিও আমাদের লক্ষ্য হলো ১ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন করা। আমি আগেও বলেছি, আমাদের কার্যক্রমের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইস গেটগুলো দ্রুত আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হোক। তা এখনও হয়নি। এছাড়া ডিএনডি বাঁধ, হাতির ঝিল প্রকল্প, মেট্রোরেলের কার্যক্রমের ফলে জলাবদ্ধতার সম্পূর্ণ সমাধান এখন পর্যন্ত দেওয়া সম্ভব না হলেও অতীতের মতো ঢাকাবাসীকে কোথাও কোমর পানি বা গলা পানিতে নাজেহাল হতে হয়নি।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আজকের বৃষ্টিতে যেসব জায়গায় জলজট সৃষ্টি হয়েছে আমরা সেসব স্থানকে আমাদের পরবর্তী কার্যক্রমে প্রাধিকার দেবো এবং আগামী ২ বছরের মধ্যে জলাবদ্ধতাকে একটি সহনীয় মাত্রায় আনতে সক্ষম হবো বলে আমি বিশ্বাস করি। আমাদের প্রত্যাশা হলো, দীর্ঘমেয়াদে ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়া।
এএসএস/এনএফ/জেএস