গাবতলীতে বাস ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ

ঈদ উপলক্ষ্যে রাজধানীর গাবতলীতে বাস ভাড়া বাড়তি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যান্য সময় যেই ভাড়া নেওয়া হতো তার থেকে জনপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। এই হিসাব ননএসি বাসের ক্ষেত্রে। তবে বিভিন্ন এসি বাসের ব্রান্ড অনুযায়ী অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বাড়ি ফেরা মানুষরা।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৯ মার্চ) সকালে গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে বিষয়টি জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের চাপ লক্ষ্য করা গেছে। তবে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে আবার কেউ একাই এসেছেন গাবতলীতে। কেউ বাস টার্মিনালে অগ্রিম টিকিটের খোঁজ করছেন। যারা টিকিটের খোঁজে কাউন্টার থেকে কাউন্টার ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাদের কাছ থেকেই অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। তবে কাউন্টার মালিকদের দাবি বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়ার মধ্যেই নেওয়া হচ্ছে। তবে অনেকে উপায় না পেয়ে বাড়তি টাকা দিয়ে হলেও যাচ্ছেন গন্তব্যে।
বিজ্ঞাপন
গাবতলী বাস টার্মিনালে পূর্বাশা কাউন্টারের ফারুখ হোসেন বলেন, টিকিট আগেই সেল হয়ে গিয়েছে। তবে কিছু টিকিট আমাদের কাছে আছে। এই টিকিটগুলোই এখন বিক্রি করছি।
বিজ্ঞাপন
অতিরিক্ত ভাড়ায় টিকিট বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সরকারের নির্ধারিত ভাড়ায় টিকিট বিক্রি করছি। তবে সেটা অন্যান্যবারের চেয়ে কিছুটা বেশি। আমরা গাবতলী থেকে জনপ্রতি ভাড়া নিচ্ছি ৭৫০ থেকে ৮শ টাকা। ঈদ ছাড়া বাকি সময় এই ভাড়া ৬৫০ টাকা করে নেওয়া হতো। তবে সরকারের নির্ধারিত ভাড়া আরও বেশি। সেই হিসেবে আমরা ভাড়া কমই নিচ্ছি।
গাবতলী বাস টার্মিনালে সাকুরা পরিবহনের মো. আল-আমিন বলেন, আমরা পটুয়াখালী পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছি ৭১০ টাকা করে। এটা অন্যান্য সময় ৬৫০ টাকা করে নিয়ে থাকি। কারও কাছ থেকেই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাত্রীর উপচেপড়া ভিড় নেই। তবে প্রত্যেক গাড়িই ফুল যাচ্ছে। মানে ওইদিক থেকে ফাঁকা এলেও এখান থেকে যাত্রী ভরে যাচ্ছে। যাত্রীর চাপ না থাকলেও সংকটও নেই।
গাবতলীর শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারের মো. সোহেল জানান, আমাদের গাড়ি তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যায়। ভাড়া অন্যান্য সময়ের চেয়ে কিছুটা বেশি রাখলেও সরকার নির্ধারিত ভাড়ার মধ্যেই আছে। ঠাকুরগাঁও পর্যন্ত আমাদের ননএসি বাসের ভাড়া নিচ্ছি এক হাজার ৩০০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ১৪শ টাকা থেকে ১৮শ টাকার মধ্যে। আমাদের বাসের টিকিট আগেই অনলাইনে বিক্রি হয়ে যায়। সরাসরি খুবই কম পরিমাণে পাওয়া যায়। এজন্য কেউ চাইলেই আমাদের বাসের ভাড়া অতিরিক্ত রাখতে পারবে না।
সাব্বির নামে এক যাত্রী পূর্বাশা বাসে যাবেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে। সেজন্য গাবতলীতে এসেছেন টিকিট কেটে সরাসরি গন্তব্যে যাবেন। এ যাত্রী বলেন, এসি বাসের টিকিট কেটেছি। কাউন্টারের লোকজন প্রথমে ১৪শ টাকা ভাড়া চেয়েও এক হাজার টাকায় টিকিট দিয়েছে। একদম পেছনে সিট পেয়েছি। অন্যান্যবারের চেয়ে প্রায় ৩শ টাকা বেশি নিয়েছে টিকিটের দাম। দাম বেশি হলেও বাড়িতে যেতে হবে, সেজন্যই অতিরিক্ত ভাড়ায় টিকিট কেটেছি।
রহমত নামে বরিশালগামী এক যাত্রী বলেন, আগেই টিকিট কেটে রেখেছিলাম। এজন্য টিকিট কাটার ঝামেলায় পড়তে হয়নি। পরিবার নিয়ে যাচ্ছি, এজন্য আগেভাগেই টিকিট কেটেছি। তবে ঈদ উপলক্ষ্যে প্রতিবারের মতো এবারও বাড়তি দামে টিকিট কাটতে হয়েছে।
কাউন্টার থেকে প্রতিবারই অতিরিক্ত ভাড়া নেয়। এবারও তাই নিয়েছে। অন্যান্যবারের চেয়ে এবার আমার চারটা টিকিটে এক হাজার টাকা বেশি নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এসআর/এমএ