ব্যবসায় বখরা দাবি, না দেওয়ায় জুলাই আন্দোলনের মামলায় হয়রানি

ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকায় সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী তার রাইদা কালেকশন লিমিটেডের লভ্যাংশ ৫০ শতাংশ দিতে রাজি না হওয়ায় জুলাই আন্দোলনের মামলায় আসামি করে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী বলছেন, মিথ্যে মামলায় শুধু তাকেই আসামি করা হয়নি, তার ভাইকেও আসামি করে হয়রানি করা হচ্ছে। এর আগেও তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
আর তার এই অভিযোগ ভালুকা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোর্শেদ আলম ও যুগ্ম আহ্বায়ক বাউন্ডারী শহীদের বিরুদ্ধে।
বিজ্ঞাপন
মূলত, তাদের চাঁদা না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সেই এলাকায় জুলাই আন্দোলনে মাস্টারবাড়ীতে শহীদ তোফাজ্জল হোসেন নামে একজন নির্মাণশ্রমিক হত্যা মামলায় তাদের আসামি করা হয়। এছাড়াও তাদের নামে এই বাউন্ডারী শহীদ এর আগেও দুটি মামলা দিয়ে হয়রানি করেছিল বলে দাবি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্র্যাব) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আবু সাঈদ সরকার।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী আবু সাঈদ সরকার ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হরিরবাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুছ ছালাম সরকারের ছেলে। এই মামলায় আরেক আসামি তারই ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, আমার ভাই সাইফুল ইসলাম সরকার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভালুকা উপজেলা নেতা ছিল। এখন ভালুকা যুবদলের সক্রিয় নেতা। সাইফুল গেল ২৪ এর ছাত্র জনতার আন্দোলনে জীবন বাজি রেখে অংশ গ্রহণ করে। সেই সময় মাস্টারবাড়িতে তোফাজ্জল হোসেন নামে একজন নির্মাণশ্রমিক শহীদ হন। আমরা শহীদ তোফাজ্জল হোসেন হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে রাজপথ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ভূমিকা পালন করি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ২১ মার্চ একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আমার ছোটভাই যুবদল কর্মীকে ইচ্ছা করেই ফাঁসানো হয়েছে। আর এই কাজটি করেছে ওয়ার্ড যুবদল নেতা শরিফ যে কি না বাউন্ডারী শহীদ ও মোর্শেদ গ্রুপের ক্যাডার।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাই সাইফুল ইসলাম রাইদা কালেকশন লিমিটেডের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে। ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা থেকেই উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোর্শেদ আলম ও যুগ্ম আহ্বায়ক বাউন্ডারী শহীদকে ৫০ শতাংশ ব্যবসার লভ্যাংশ না দিলে তারা ফ্যাক্টরি থেকে কোন প্রকার মালামাল ও ময়লা পর্যন্ত বাহির করতে দেবে না বলে হুমকি দেয়। আমার ভাই তাদের বখরা না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। সেই কারণেই মূলত গত ২১ মার্চ আমার ভাইয়ের নামে মামলা করে।
ভুক্তভোগী বলেন, এর আগেও একাধিক ব্যক্তি বাদী হয়ে একাধিক মামলা করেছে এই তোফাজ্জল হত্যা বিষয়ে যার একটিতেও সাইফুল ইসলামের নাম ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে সাইফুলের নাম আসায় আমরা অবাক হয়েছি। এমতাবস্থায় আমি আপনাদের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দলের নীতি নির্ধারক ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে আকুল আবেদন, শহীদ তোফাজ্জল হোসেনের হত্যাকারী প্রকৃত আসামিদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হোক।
সাঈদ বলেন, এখন আমি ও আমার পরিবারের লোকজন চরম কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছি। সন্ত্রাসীদের হামলার ভয়ে নিজের বাড়িতে থাকার সাহস পাচ্ছি না। আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শেও রাজনীতি করার কারণে গত ১৬ বছর আমরা নানান নির্যাতনের শিকার দাবি করে ভুক্তভোগী সাঈদ বলেন, একাধিকবার আমার বাড়িতে হামলা হয়েছে। আমার ছোট ভাই সাইফুল ছাত্রদলের ভালুকা উপজেলা নেতা ছিল। এখন ভালুকা যুবদলের সক্রিয় নেতা। জুলুমবাজ সরকার ভালুকা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নামে একাধিক রাজনৈতিক মামলা দিয়েছিল। সেখানে প্রত্যেকটি মামলায় আমার ভাই সাইফুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। তার নামেও একাধিক রাজনৈতিক মামলা করা হয়।
জেইউ/এমএ