আমাদের টার্গেট ফুলফিল হয়ে গেছে : ইসি আনোয়ারুল

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে আমাদের টার্গেট ফুলফিল হয়ে গেছে। আগামী জুনের মধ্যে আমরা ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করতে পারবো।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদে আমাদের যে টার্গেট তা ফুলফিল হয়ে গেছে এবং জুনের মধ্যে আমরা এটা চূড়ান্ত করতে পারবো। প্রাথমিক যে ধাপটা সুন্দরভাবে শেষের দিকে আছে বলে আমরা মনে করি। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর আসন বিন্যাসের কাজটি আমরা জুনের ভেতরে শেষ করতে পারবো। এটার জন্য যে আইনটা ছিল ডিলেমিটেশন আইন সেটার কিছু প্রিন্ট মিস্টেকসহ আমরা কিছু প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম সেটার চূড়ান্ত কপি এখনও হাতে পাইনি। হয়ত এটি প্রক্রিয়াধীন আছে। কিছুদিনের মধ্যে হয়ত পেয়ে যাব। যদি এ সংশোধনীটা হয়, তাহলে আমরা ডিলেমিটেশনের কাজটা করতে পারবো। অন্যথায় যেভাবে আছে, সেভাবে নির্বাচনটা করতে হবে। এটা আমাদের জুনের ভেতরে করার পরিকল্পনা আছে।
বিজ্ঞাপন
দল নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি বলেন, আপনারা জানেন আমরা একটা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করছি। এটা স্থগিত করার বিষয়ে আদালত একটা আদেশ দিয়েছে, কিন্তু আদেশের কপি আমাদের কাছে এখনও আসেনি।
এছাড়া আনুষঙ্গিক বিষয় যেমন আচরণ বিধি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের আচরণ বিধি বা অন্যান্য যারা সংশ্লিষ্ট থাকবে তাদের আচরণ বিধি নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা... আগের যে আচরণ বিধিটা হয়েছে সেটা এবং সংস্কার কমিশনের যে সুপারিশগুলো আছে সেগুলো এর সঙ্গে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কিছু বিষয় আমরা মোটামুটিভাবে ভালো নির্বাচনের জন্য সহায়ক সেই পয়েন্টগুলো আমরা ইনকর্পোরেটেড করার চেষ্টা করছি। এটি এখনো খসড়া পর্যায়ে। ফুল কমিশনের সিদ্ধান্তের আগে চূড়ান্ত বলা যাবে না।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, পর্যবেক্ষক নীতিমালা সেটি কমিশনে অনুমোদনের আগে বলা যাবে না এটি চূড়ান্ত। আমরা খসড়া সাবমিট করেছি। এরপরে ধরেন আমরা নির্বাচন রিলেটেড যে প্রোক্রিউমেন্ট সেটাও তো আমাদের ফিন্যান্সিয়াল ইয়ার জুনের ভেতরে করতে হচ্ছে। এটা হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। এছাড়া আমাদের এ কাজগুলো হয়ে যাবে তখন জিআইইস যে জিনিসটা তা ম্যাপের মধ্যে রিফ্লেকশন হবে। কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, কোথায় কোন ভোট কেন্দ্র হবে, কোন কেন্দ্রে কত ভোটার হবে এট একটা ম্যাপের ভেতরে দিয়ে দেব। পরবর্তী পর্যায়ে আমরা পুলিং পারসনদের যে প্যানেল সে প্যানেলটাও আমরা জুলাই-আগস্টের দিকে প্রস্তুত করে ফেলব।
এক প্রশ্নে মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, রাজনীতিবিদসহ অন্যান্য স্টেক হোল্ডার যারা আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, তাদের সঙ্গে আমাদের মত বিনিময় হবে।
কোন সময়কে ধরে নিয়ে কাজগুলো শেষ করতে চাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জুলাই-আগস্ট এর মধ্যেই ফুল প্রস্তুত থাকার চিন্তা করছি। কারণ আমাদের যে সংশোধনীগুলো আইনে আসছে সেগুলোর ম্যানুয়াল পাবলিশ করতে হবে। এই জিনিসগুলো আবার ডিস্ট্রিবিউট করতে হবে। তারপরে মাঠ পর্যায়ে থেকে সব পর্যায়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। অক্টোবরে যদি আমরা তফসিল ঘোষণার চিন্তা করি তাহলে জুলাই-আগস্ট এর ভেতরে আমাদের সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা এগুচ্ছি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী ডিসেম্বরের টার্গেট করে সরকারের দিক থেকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরাও ডিসেম্বরকে টার্গেট করে সব ধরনের পরিকল্পনাসহ কাজগুলোকে এগিয়ে নিচ্ছি।
আরও পড়ুন
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের মধ্যে উত্তেজনা থাকে, এ বিষয়গুলো আপনারা কতটা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা নির্বাচন হলো রাষ্ট্রের প্রতিটা অরগানের সহযোগিতার একটা ইন্টিগ্রেটেড রেজাল্ট। এখানে আমাদের বিশ্বাস নির্বাচন কমিশনকে সবাই সহযোগিতা করবে এবং এবারের নির্বাচন সবাই চাচ্ছে নজিরবিহীন সুন্দর নির্বাচন হবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন মনে করে, যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সময় নির্বাচনটা হচ্ছে, সেহেতু কোনো প্রকার প্রভাব, কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্বহীনভাবে, নির্ভেজালভাবে নিরপেক্ষহীনভাবে এ কমিশন কাজ করতে সক্ষম। যেকোনো মূল্যই হোক একটা ভালো নির্বাচনের বিকল্প নেই। সবাই নির্বাচন কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছে। সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি সব জায়গা থেকে সবাই সহযোগিতা করবে। সেই সহযোগিতার রেজাল্টটি হবে একটা ভালো নির্বাচন।
তিনি বলেন, বিষয়টা আসলে আচরণ বিধিমালায় নির্বাচনী প্রচারণায় যারা ভিআইপি রয়েছেন, তারা যাতে মুভমেন্টের সময় কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সে বিষয়টা আচরণবিধিতে অলরেডি আছে। সেটার সঙ্গে ধরে নির্বাচিত সরকারের বাইরে ও বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে। ভবিষ্যতে কেয়ারটেকার সরকারও থাকতে পারে সেক্ষেত্রে পদ পদবির দিক থেকে অন্যান্য ভিআইপি মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে আমরা উপদেষ্টা শব্দটিও প্রস্তাব করব। আমরা এখনো পুরোপুরি খসড়াটা করি নাই। পরে নির্বাচন কমিশন যদি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করে তাহলে এটি চূড়ান্ত হবে।
এসআর/এমএন