নাম পরিবর্তন হচ্ছে না মঙ্গল শোভাযাত্রার

নাম পরিবর্তন হচ্ছে না মঙ্গল শোভাযাত্রার। একইসঙ্গে দুই দিনব্যাপী উদযাপিত হবে এবারের পহেলা বৈশাখ। এবারের প্রতিপাদ্য রাখা হয়েছে- ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।
বিজ্ঞাপন
গতকাল সোমবার বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের কর্মসূচি প্রণয়নের লক্ষ্যে এক সভা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, দুই দিনব্যাপী নববর্ষের উৎসবে পহেলা বৈশাখের সঙ্গে থাকছে চৈত্র সংক্রান্তির আয়োজনও। তবে মঙ্গল শোভাযাত্রা নাম পরিবর্তন নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
বিজ্ঞাপন
সভায় স্পষ্ট করা হয় যে, এই শোভাযাত্রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুদিনের ঐতিহ্যের পরিচায়ক। এই ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা অব্যাহত রেখে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আরও বড় পরিসরে, বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে এবং লোক-ঐতিহ্য ও ২৪ এর চেতনাকে ধারণ করে ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এবছর শোভাযাত্রায় সর্বজনীন অংশগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে।
শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে পয়লা বৈশাখ সকাল ৯টায় বের করা হবে। শোভাযাত্রাটি শিশুপার্কের সামনে থেকে ঘুরে শাহবাগ হয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গিয়ে শেষ হবে।
বিজ্ঞাপন
উৎসবমুখর পরিবেশে নববর্ষ উদযাপনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশাকে আহ্বায়ক করে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটি ও বিভিন্ন উপ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পয়লা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
ক্যাম্পাসে নববর্ষের দিন সব ধরনের অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে। নববর্ষের আগের দিন ১৩ এপ্রিল রোববার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনও গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোনও ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধু নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেইট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন।
নববর্ষের দিন রাজু ভাস্কর্যের পেছনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগত ব্যক্তিবর্গ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য চারুকলা অনুষদের সামনের ছবির হাটের গেট, বাংলা একাডেমির সামনের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে প্রস্থানের পথ হিসেবে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট, রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেট ও বাংলা একাডেমির সামনের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট ব্যবহার করা যাবে।
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্প ডেস্ক, কন্ট্রোল রুম এবং অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশপাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে।
সভায় নববর্ষের দিন নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপন করে তা মনিটরিং করার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সভায় সভাপতিত্ব করেন। এসময় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএ