জুলাই বিপ্লবে আহতদের সঙ্গে ১৮ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ফোরামের ইফতার

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া জুলাই বিপ্লবে আহত যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ইফতার করেছেন ১৮তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ফোরাম।
রোববার (২৩ মার্চ) জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যান্টিনে এই ইফতারের আয়োজন করা হয়। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি থাকা জুলাই আগস্টে আহত ও তাদের অভিভাবকরা অংশ নেন।
ইফতারের আগে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, জুলাই আগস্টে চোখে আঘাত পেয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে এক হাজার ৭৪ জনের ওপরে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় আরও থাকতে পারে। এই হাসপাতালে ৭০০ এর বেশি চিকিৎসা নিয়েছেন। এখনও ভর্তি আছেন ১২১ জন। এখানে কাউকে চিকিৎসার বাইরে রাখা হয়নি। আমাদের ডাক্তারদের যে মন মানসিকতা ছিল, তাতে কাউকে চিকিৎসার বাইরে রাখার সুযোগ কম।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আমাদের এখানে সকাল এসে ভর্তি হয়েছে, দুপুরে অপারেশন হয়েছে, আবার বিকেলে চলেও গেছে। কারণ এখানে তারা ভয় ছিল। যদি রাতে পুলিশ আসে তাদের খোঁজে।
হাসপাতালের পরিচালক আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরে আবার অনেকে এসে ভর্তি হয়েছে। এছাড়া সাধারণ ভর্তি আছেন। আমার সবার দিকে সমান নজর দিতে হয়। ঈদের সময় হাসপাতালে ইমার্জেন্সি সার্ভিস চালু থাকবে।
১৮তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ফোরামের সহ-সভাপতি ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রশিক্ষণ প্রফেসর প্রিম রিজভী বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের অসীম সাহস ও ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের দেশটি ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে। ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধ দৃষ্টি শক্তি, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও প্রাণ হারিয়েছে। শরীরে অসংখ্য বুলেট বিদ্ধ অনেকেই অন্ধত্ব ও মৃত্যুর অপেক্ষায় এখনও।
তিনি বলেন, আমি ব্যক্তি হিসাবে আমার মাতৃভূমির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আর বেশিরভাগ জুলাই যোদ্ধাই আমার সন্তানসম হওয়ায় গভীর মমতায় আগস্ট ২০২৪ থেকেই হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে বেড়াই আহত যোদ্ধাদের কাজে আসার জন্য। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। তাদের প্রতি আমার ও আমার পরিবারের অসীম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য আমার ও আমার পরিবারের পক্ষে যতটুকু সম্ভব করার চেষ্টা করে চলি। এরই ধারাবাহিকতায় সেপ্টেম্বরে আগারগাঁও চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পালিত খুনিদের চালানো গুলিতে চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়া জুলাই যোদ্ধাদের সহায়তা করতে এসে পরিচিত হই জুলাই যোদ্ধাদের নিঃস্বার্থ সহায়তা করে এমন একটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্রুপের সাথে। তাদের কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হয়ে এরপর থেকে তাদের মাধ্যমে অসহায় শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন বা পাশে থাকার চেষ্টা করি। সংগঠনটির নাম অনারারি গিফটস ফোর আওর ইনজুরড হিরোজ: হেল্প ট্রাস্ট ফর স্টুডেন্টস।
১৮তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ফোরামের সহ-সভাপতি বলেন, আমার ব্যাচের (১৮তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার) নব নির্বাচিত কমিটি যখন ইফতার মাহফিলের আয়োজনের কথা চিন্তা করে তখন আমি তাদের জানাই, যে দেশে অসংখ্য সূর্য সন্তান দেশকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করার যুদ্ধে অকাতরে নিজের অঙ্গ ও দৃষ্টি শক্তি আসলে নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যতেরই দেশকে দিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে সামান্য চিকিৎসার জন্য ঘুরছে, তখন ইফতার পার্টির নামে অর্থ উড়ানো এক ভয়ংকর পাপ। আমরা আমাদের ইফতার করবো আমাদের সহযোদ্ধাদের সাথে। আমাদের দেশের গর্বিত সন্তানদের সাথে। জুলাই যোদ্ধাদের সংস্পর্শে আসতে পারাও এক বিশাল সম্মান ও ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার গৌরব অর্জন।
ইফতারে অংশ নেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও মাউশির পরিচালক মাধ্যমিক প্রফেসর ড. খান মাইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ড. মাসুদ রানা, ১৮তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ফোরামের সভাপতি প্রফেসর এফ এম শাকিরুল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর কাজী জালাল আহমেদ প্রমুখ।
এমএইচএন/এআইএস