ঈদযাত্রায় রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের ৯ সুপারিশ

আসন্ন ঈদুল ফিতরে সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে ৯টি ভিন্ন ভিন্ন সুপারিশ করেছেন তরুণরা। তারা বলেন, রোডক্র্যাশ প্রতিরোধে এবং সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন একটি উপযুক্ত আইন, যা বাংলাদেশে নেই। তাই একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন এবং এর যথাযথ প্রয়োগ খুবই জরুরী।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সভাকক্ষে আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিংয়ের আয়োজনে ঈদযাত্রায় রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের সুপারিশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন ইয়ুথ ফোরামের সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্যমতে গত ঈদুল ফিতরের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ের রোডক্র্যাশে ১৭ দিনে সারা দেশে ২৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২০ জন নিহত এবং ৪৬২ জন আহত হয়। তাই ঈদযাত্রাসহ দেশে রোডক্র্যাশের সংখ্যা কমিয়ে আনা খুবই প্রয়োজন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
এ সময় তিনি ৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে—
বিজ্ঞাপন
১. দেশের সড়ক ও যানবাহনের পরিস্থিতির কথা ভেবে নিরাপদ গতি নির্ধারণ করতে হবে এবং এই সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন অতিসত্বর প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি ঈদে মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা মেনে চলতে সবাইকে বাধ্য করতে হবে।
২. মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী উভয়েরই ঈদে চলাচলে মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং অতিদ্রুত এ সংক্রান্ত এনফোর্সমেন্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করতে হবে।
৩. সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে।
৪. চালকদের কর্মঘণ্টা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ঈদযাত্রায় তারা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়। কারণ, ক্লান্ত চালক যেমন নিজের জীবনের ঝুঁকি বাড়ায়, তেমনি যাত্রীদের জন্যও বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
৫. ঈদযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কে নছিমন, করিমন, টেম্পুসহ সব প্রকার ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও ভটভটি চলাচল বন্ধ করতে হবে।
৬. মদ বা নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করে যেন গাড়ি না চালায় সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে এবং এ সংক্রান্ত বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে।
৭. ঈদযাত্রায় যানবাহনে চালকসহ সব যাত্রীর সিটবেল্ট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং অতিদ্রুত এ সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৮. পরিবহনের পাশাপাশি পথচারী পারাপার ও তাদের নিরাপদে চলাচলে উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে ফুটপাত হকারমুক্ত করতে হবে এবং ফুটওভারব্রীজ পথচারীবান্ধব করতে হবে। এর সঙ্গে ফুটপাত ও ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারে পথচারীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে এবং পারাপারের সময় মুঠোফোন ব্যবহার না করা, জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে পথচারীদের সচেতন করতে হবে।
৯. সর্বোপরি, বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আদলে সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় ইয়ুথ ফোরামের পক্ষ থেকে এ.এফ.এম সাদমান সাকিব, বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্ট সোসাইটির জাকিয়া মাইশা ও নিশাত তারান্নুম, বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের ইশতিয়াক ইমন, মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আহসান রনিসহ বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরএইচটি/এমজে