ঢামেকে রোগীদের জন্য ইফতারির বাজেট নেই

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রোগীদের ইফতারের জন্য আলাদা কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। রোজার মাস বিবেচনায় না নিয়ে অন্য সময়ের মতোই দেওয়া হয় রোগীদের খাবার। স্বজনরা রোগীর জন্য এবং নিজেদের জন্য বাইরে থেকে ইফতারি কেনেন।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
মানিকগঞ্জ থেকে আসা নিউরো সার্জারি বিভাগের ফ্লোরে চিকিৎসাধীন রোগী দুর্জয়ের মা শিল্পী আক্তার জানান, আমার ছেলে শুক্রবার মোটরসাইকেল অ্যাক্সিডেন্ট করে। তাকে প্রথমে জরুরি বিভাগের নিয়ে আসা হয়, পরে এখানে নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। রোগীর জন্য সরকারি বরাদ্দ করা নিয়মিত খাবার দিলেও এখানে ইফতারির কোনো ব্যবস্থা নেই। ইফতারের আগে আমরা হাসপাতালের বাইরে গেটের কাছের দোকানগুলো থেকে খাবার কিনে আনি।
বিজ্ঞাপন
ঢামেকের সার্জারি বিভাগে ভর্তি আছেন টাঙ্গাইলের আমির হামজা। তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে নিয়মিত সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার, বিকেলের নাশতা ও রাতের খাবার দেওয়া হয়। কিন্তু ইফতারির জন্য রোগী বা তার স্বজনদের কোনো খাবার দেওয়া হয় না। যারা রোজা রাখেন, তারা বাইরে থেকে কিনে এনে ইফতারি করেন। আমাদের বাড়ি টাঙ্গাইলে, এখানে ইফতারি দেওয়ার মতো নিজেদের কেউ নেই। তাই কিনে খাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ইফতারি কেনার সময় কথা হয় জুলহাস নামে একজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা গত ৯ তারিখে লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকা মেডিকেলে এসেছি। আমার বাবা আলী হোসেন নতুন ভবনে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি আছেন। রোজা তো রাখতেই হয়। হাসপাতালের সামনের দোকান থেকে ইফতারি কিনে নিয়ে যাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কিচেনের এক কর্মচারী জানান, আমাদের এখানে ইফতারির জন্য আলাদা কোনো সরকারি বাজেট নেই। রোগী প্রতি ১৭৫ টাকা বরাদ্দ থাকে। এর মধ্যে সকালের নাশতা হিসেবে পাঁচ পিসের একটি পাউরুটি, একটি ডিম, একটি কলা এবং ২০০ মিলিগ্রামের এক প্যাকেট দুধ থাকে। দুপুরের জন্য ভাত, মাছ, সবজি ও ডাল। বিকালের নাশতায় চার পিসের দুই প্যাকেট বিস্কুট, একটি কলা, একটি ডিম এবং রাতের জন্য ভাত, বয়লার মুরগির মাংস, সবজি ও ডাল দেওয়া হয়। বিশেষ দিনে খাবারে কিছু ভিন্নতা থাকে, এছাড়া সারা বছর রোগীদের জন্য একই ধরনের খাবার দেওয়া হয়।
জামালপুরের মেলান্দ থেকে আসা আব্দুল বারেক ভর্তি আছেন হাসপাতালে ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে। তার বোনজামাই আতিকুল ইসলাম বলেন, সিট না থাকায় রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে সিঁড়ির করিডোরে আছি। রোগীর জন্য হাসপাতালে খাবার দেওয়া হলেও রমজান মাস উপলক্ষ্যে আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। ইফতারির জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা করলে ভালো হতো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুর রহমান বলেন, হাসপাতালে রোগীদের জন্য ইফতারির ব্যবস্থা থাকে না। কারণ, রোগীরা সাধারণত রোজা রাখতে পারেন না, তাদের সকাল-বিকাল নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়, একটা নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তাই নিয়মানুযায়ী দিনে ৪ বার সরকারি বরাদ্দের খাবার দেওয়া হয়। ইফতারের জন্য আলাদা বরাদ্দ নেই।
এসএএ/এসএম