সৌদি প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনের খরচ দেবে সরকার
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যাওয়া প্রবাসী কর্মীদের কোয়ারেন্টাইন খরচ কমাতে ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে গমনেচ্ছু বাংলাদেশি কর্মীদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা কমানোর চিন্তাভাবনাও করছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের যারা সৌদি আরবে যাচ্ছে তাদের সাত দিনের কোয়ারেন্টাইন করতে হয়। ওখানে বিভিন্ন লেভেলের হোটেল রয়েছে। আমাদের প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনের জন্য যেসব হোটেল নির্ধারণ করেছে সৌদি সরকার, সেগুলো অনেকে ব্যয়বহুল। প্রবাসীদের এসব হোটেলে যেতে আগ্রহ কম।
তিনি বলেন, তাদের (প্রবাসী) কষ্ট দেখে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, আপনারা হোটেলের ব্যবস্থা করেন। তাই আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, প্রবাসীরা সৌদিতে গেলে আমরা সাবসিডি (ভর্তুকি) দেবো। বিষয়টি নিয়ে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীর সঙ্গে আমি আলাপ করেছি।
করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে জানিয়ে মোমেন বলেন, বাংলাদেশে ভারত থেকে অনেক লোক এসেছেন। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ভারতীয় ধরন নিয়ে এত প্রচারণা হচ্ছে যে, সবাই ভয় পাচ্ছে। বিদেশিরা ভাবছে বাংলাদেশে বোধ হয় এ ধরন খুব বেশি।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ যেমন- সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, আমিরাত, দক্ষিণ কোরিয়া, বাহরাইন ও যুক্তরাজ্য রেড এলার্ট দিয়ে রেখেছে। বিভিন্ন দেশ আমাদের সব ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ হলো তাদের ভয়। তবে সৌদি আরব একমাত্র খোলা রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স শিথিলের চিন্তা করছে জানিয়ে মোমেন বলেন, আমাদের যারা মধ্যপ্রাচ্যে যায়, তাদের অনেকেই ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আমাদের দেশে বয়স ৪০ এর বেশি হলে টিকা নিতে পারেন। মধ্যপ্রাচ্যে ডাবল ডোজ হলে কোয়ারেন্টাইন করতে হয় না, শুধু টেস্টে নেগেটিভ থাকলে বাড়িতে গিয়ে কোয়ারেন্টাইন করা যায়।
তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব করতে চাইব স্পেশাল ব্যবস্থা করে ২০ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা দিতে। আমরা এটি নিয়ে কালকে আলাপ করব। এটা হলে প্রবাসীদের অনেক উপকার হবে। আমরা চিন্তাভাবনা করছি, এখনও কিছু হয়নি।
চীন-রাশিয়া থেকে দ্রুত সময়ে টিকা আনার চেষ্টা
চীন ও রাশিয়া থেকে দেশে দ্রুত সময়ে টিকার আনার জন্য সরকার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া থেকে টিকা সংগ্রহে কাজ চলছে। আজ মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। চীনের সঙ্গে যেভাবে ফাইনাল হয়েছে একইভাবে রাশিয়ার সঙ্গে হবে। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর রাষ্ট্রদূত এটা দেখবেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পাঠাবে আর আমাদের রাষ্ট্রদূত ডিল (চুক্তি) করবেন।
কবে নাগাদ রাশিয়ার টিকা দেশে আনা সম্ভব হবে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, আমি বলতে পারব না, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। অন্যদিকে চীনের টিকা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। তিনি আমাকে নিশ্চিত করেছেন, যে চীনের টিকার যোগান অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে টিকা আনার চেষ্টা করছি।
এনআই/আরএইচ