বঙ্গবন্ধু সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দুর্নীতি

বঙ্গবন্ধু সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ক্রয় ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এক অভিযানে ওই দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। সংস্থাটির জনসংযোগ দপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধু সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে জনবল নিয়োগ ও হাসপাতাল পরিচালনায় অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার একটি অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে এনফোর্সমেন্ট টিম হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।
তিনি বলেন, রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায়, যন্ত্রপাতি ক্রয় সংক্রান্ত অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এছাড়া, প্রকল্পের অর্থায়নে ১৫৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ শেষে অত্র প্রতিষ্ঠানে অন্তত ৫ বছর চাকরি করবেন এরূপ শর্তে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হলেও, প্রশিক্ষণ শেষে ৮৫ জন কর্মকর্তা হাসপাতালে যোগদান করেননি। অধিকতর প্রয়োজনের অতিরিক্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে অনিয়মের সত্যতাও পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে হাসপাতালের অভ্যন্তরে ২টি ব্যাংক ও একটি ফার্মেসি পরিচালনায়ও অনিয়ম পেয়েছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ৭৫০ বেডের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি আমেরিকা, সিংগাপুর ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের মতো কর্পোরেট সুবিধা থাকবে এমন স্বপ্নে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বিশাল ওই প্রতিষ্ঠানে কার্যত কোনো সেবাই মিলছে না। ২৮৩ কোটি টাকার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির বেশির ভাগই নষ্ট হওয়ার উপক্রম। হাসপাতালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য চুক্তি অনুযায়ী ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয় কোরিয়ান সরকার। বাকি ৫০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার দেয়।
অন্যদিকে একই দিন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এবং গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ও অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে অনুমোদন ব্যতিরেকে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দ্বারা ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণের অভিযোগে আরও একটি অভিযান করে দুদকের গাজীপুর অফিস।
ওই অভিযানে দেখা যায়, ভবনটির তৃতীয় তলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। ভবনটি অনুমোদিত নকশার বাইরে নির্মাণ করা হয়েছে কিনা এবং তা ঝুঁকিপূর্ণ কিনা তা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছে দুদক টিম। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা সাপেক্ষে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানিয়েছে দুদকের জনসংযোগ দপ্তর।
আরএম/এসএম