জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তাদের উচ্ছেদ বন্ধের দাবি

রাজধানীর ধানমন্ডির রাপা প্লাজা থেকে জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তাদের উচ্ছেদ চেষ্টা বন্ধ করা ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নির্মিত জয়িতা টাওয়ারে পুনর্বাসন করাসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছেন ফাউন্ডেশনটির নারী উদ্যোক্তারা।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তা কহিনূর আক্তার বলেন, জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তারা সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের নারী জাগরণের আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা সরকারকে সহযোগিতা করেছে। নিজেদের স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি আমরা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অংশ নিয়েছি।
বিজ্ঞাপন
জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তারা নির্দিষ্ট জামানতের বিনিময়ে রাপা প্লাজায় পণ্য প্রদর্শন ও বিপণনের জন্য সরকারের কাছ থেকে দোকান বরাদ্দ নেয় জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জয়িতা ফাউন্ডেশনের নিজস্ব ভবন নির্মাণের পর উদ্যোক্তা সমিতিগুলো সেখানে স্থানান্তর করা হবে এবং প্রতিটি সমিতিকে একটি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে। মূলত সেই বরাদ্দের বিপরীতে প্রতিটি সমিতি ফাউন্ডেশনকে জামানত দেয়। অথচ জয়িতা ফাউন্ডেশনের নিজস্ব ভবন নির্মাণের পর সেখানে সমিতিগুলোর জন্য দোকান বরাদ্দ না দিয়ে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে রাপা প্লাজা থেকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়। ৩১ মার্চের পর জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তাদের সমিতিগুলো কোথায়, কীভাবে ব্যবসা পরিচালনা করবে, সেই ব্যাপারে কোনো দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। পরে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছে, ফাউন্ডেশনের নিজস্ব ভবনে সরকার ভিন্নভাবে দোকান বরাদ্দ বা ব্যবসা পরিচালনা করবে। সমিতিগুলো সেখানে পণ্য সরবরাহ করবে। মৌখিকভাবে বলা হয়েছে, টেন্ডারের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে বরাদ্দ দেবে। যদি টেন্ডার হয় তাহলে তৃণমূল নারী উদ্যোক্তারা কীভাবে এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবে?
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
সরকারের এ সিদ্ধান্ত জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিটি সমিতি ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শত শত নারীর সঙ্গে প্রতারণার শামিল মন্তব্য করে কহিনূর আক্তার বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। পতিত সরকার নারী উদ্যোক্তাদের বঞ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং প্রত্যাশার ওপর প্রতিষ্ঠিত নতুন সরকারও জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তাদের বঞ্চিত করার পথ থেকে এখনো সরে আসেনি।
সংবাদ সম্মেলনে জয়িতা নারী উদ্যোক্তা আফসানা হক তুলি তাদের সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো–
১. রাপা প্লাজা থেকে জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তাদের উচ্ছেদ চেষ্টা বন্ধ করতে হবে ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নির্মিত জয়িতা টাওয়ারে পুনর্বাসন করতে হবে।
২. জয়িতা ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরে ৮ বিভাগের ৮ জন নারী উদ্যোক্তা প্রতিনিধি রাখতে হবে।
৩. যতদিন পর্যন্ত জয়িতা টাওয়ারের কাজ সম্পূর্ণ না হবে ততদিন পর্যন্ত রাপা প্লাজায় ব্যবসা পরিচালনা করতে দিতে হবে।
৪. অবিলম্বে জয়িতা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাকালীন নারী উদ্যোক্তাদের লিখিতভাবে তালিকা প্রকাশ এবং প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে হবে।
৫. জয়িতা ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র প্রকাশ ও গঠনতন্ত্রে নারী উদ্যোক্তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
৬. জয়িতা টাওয়ার ১২তলা ভবনের দুটি ফ্লোরে রাপা প্লাজায় বিপণন ও ফুড কোর্টের সব নারী সংগঠন উদ্যোক্তাদের সশরীরে ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ দিতে হবে।
৭. আমাদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে নারীদের কর্মক্ষেত্র বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি।
ওএফএ/এসএসএইচ