রিকশাচালক সেজে বাঁচতে চেয়েছিলেন জঙ্গি চান্দু
২০১৫ সালে রংপুরের কাউনিয়ায় খাদেম রহমত আলী হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবদুর রহমান ওরফে চান্দু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। সোমবার (২৪ মে) রাতে সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৫ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার (এসপি মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, আবদুর রহমানের বাড়ি রংপুরে। তার শ্বশুরবাড়ি কুমিল্লায়। তিনি কুমিল্লাসহ ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করে বসবাস করতেন। রিকশা চালানো বা অন্য ছোটখাটো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। আবদুর রহমান নিজে খাদেমকে কুপিয়েছেন। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল ১৮-১৯ বছর ছিল। একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন তিনি।
মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, আবদুর রহমান জেএমবির সক্রিয় সদস্য হওয়ার বিষয়টি এরই মধ্যে স্বীকার করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডের অর্থদাতা বাংলাদেশের স্থানীয় ব্যক্তিরা ছিল।
খাদেম হত্যার কারণ সম্পর্কে এটিইউ জানায়, নিহত খাদেম রহমত আলী সুরেশ্বরী তরিকা পালন করতেন। তার বাড়ির পাশে বাবা-মা'র কবরকে মাজার ঘোষণা করেন তিনি। তিনি (রহমত আলী) মাজার ও মসজিদ সংলগ্ন একটি দরবার শরিফ ঘর তৈরি করে প্রতি বৃহস্পতিবার সুরেশ্বরী তরিকা মোতাবেক অনুসারীদের নিয়ে জিকির করতেন। খাদেমের এসব কর্মকাণ্ড জেএমবি সদস্যদের নজরে আসে। তাদের দাবি, খাদেম একজন ভণ্ড পীর, শিরককারী এবং দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে তাকে হত্যা করা আবশ্যক। তাই তারা তাকে (খাদেম রহমত আলী) হত্যা করেছে।
খাদেম রহমত আলীর কাউনিয়ায় একটি ওষুধের দোকান ছিল। ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাতে বাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে জেএমবি সদস্যরা তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জেএমবি সদস্যদের সম্পৃক্ততা পায়। তদন্ত শেষে ২০১৬ সালে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ।
২০১৮ সালের মার্চে আদালত ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন : মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী, বিজয়, লিটন মিয়া ইসাহাক আলী, চান্দু মিয়া সাখাওয়াত হোসেন, সারোয়ার হোসাইন। আব্দুর রহমান ছাড়া বাকি সবাই কারাগারে।
এসপি আসলাম খান জানান, আব্দুর রহমান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে পালিয়ে ছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবির ইসাবা গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জেএমবির কয়েকজন সদস্যের নাম জানা গেছে। যারা গােপনে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
এআর/এমএসি/এসকেডি