স্ত্রীসহ গণপূর্তের প্রকৌশলী আলমগীরের স্থাবর সম্পদ জব্দ
ঘুস গ্রহণ, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় টাঙ্গাইলের গণপূর্ত বিভাগের সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন ও তার স্ত্রী তাহমিনা তামান্না রুমার নামে থাকা তিন কোটি ৩৪ লাখ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বর্তমানে তিনি শেরেবাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ ৩ এ কর্মরত রয়েছেন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) আদালত সূত্রে জানা যায়, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
জানা যায়, আলমগীর ও তার স্ত্রী রুমার বিরুদ্ধে ঘুস গ্রহণ, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের উপ-পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-১) মাহবুবুল আলমকে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অবৈধ পন্থায় অর্জিত সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। এজন্য অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অবিলম্বে আলমগীর ও তার স্ত্রীর রুমার স্থাবর সম্পদসমূহ জব্দের আবেদন করা হয়। যেখানে রুনার সম্পদের পরিমাণ তার স্বামী আলমগীরের চেয়ে বেশি দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। পরে আদালত শুনানি শেষে আবেদনটি মঞ্জুর করেন। জব্দাদেশে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রুমার দুই কোটি ছয় লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইল হাউজিং এস্টেটের ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশের অংশ জমি। যার প্রদর্শিত মূল্য আড়াই লাখ টাকা। টাঙ্গাইলে বিশ্বাস বেতকা মৌজার বাড়ি শ্রেণির তিন শতাংশ জমি। যার প্রদর্শিত মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। ঢাকার মিরপুর হাউজিং এস্টেটের অন্তর্ভুক্ত ১৫ নং সেকশনের ‘ডি’ ব্লকের ১/২ নং প্লট/বাড়ি (আবাসিক কাম বাণিজ্যিক) এর ১৬ দশমিক দুই একর ভূমির ওপর নির্মিত ব্লক-৮ এ ১৫ তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবনের টাইপ-এ, টাওয়ার-২ এর ৭ম তলার ফ্ল্যাট, কমন স্পেসসহ ফ্ল্যাটের আয়তন ১৮৭২ বর্গফুট এবং নিচতলার ১২৫ বর্গফুট আয়তনের একটি কার পার্কিং। যার প্রদর্শিত মূল্য ৪৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। টাঙ্গাইলে বাড়ি শ্রেণির দশমিক ৫৫৫৬ শতাংশ জমি। যার প্রদর্শিত মূল্য ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮০ টাকা। টাঙ্গাইলে বাড়ি শ্রেণির স্থাপনাবিহীন পাঁচ শতাংশ জমি। যার প্রদর্শিত মূল্য ৮০ লাখ টাকা। এসব জমি ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ২৫ মে পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে।
এছাড়া আলমগীরের এক কোটি ২৮ লাখ টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলে আকুর ঠাকুর মৌজার পাঁচ দশমিক ৭৮ শতাংশ জমির একের চতুর্থাংশ। যার প্রদর্শিত মূল্য আড়াই লাখ টাকা। টাঙ্গাইলের সাবালিয়া মৌজায় বাড়ি শ্রেণির দশমিক ৩৯৬ শতাংশ জমি। যার প্রদর্শিত মূল্য ছয় লাখ ৬৬ হাজার ৯৫০ টাকা। টাঙ্গাইলের সাবালিয়া মৌজায় বাড়ি শ্রেণির দশমিক শূন্য ৫৭ শতাংশ জমি। যার প্রদর্শিত মূল্য এক লাখ তিন হাজার ৬৪০ টাকা। টাঙ্গাইলের বিশ্বাস বেতকা মৌজার বাড়ি শ্রেণির তিন শতাংশ জমি। যার প্রদর্শিত মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। টাঙ্গাইলের বিশ্বাস বেতকা মৌজার বাড়ি শ্রেণির আরো তিন শতাংশ জমি। যার প্রদর্শিত মূল্য ৩৩ লাখ টাকা। টাঙ্গাইলে সাবালিয়া মৌজার বাড়ি শ্রেণির দশমিক ৫৫৫৬ শতাংশ জমি। যার প্রদর্শিত মূল্য ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮০ টাকা। ঢাকার মিরপুরের সেনপাড়া পর্বতা মৌজার ৩৮ শতাংশ বাড়ি শ্রেণির জমি ও পুরাতন ১৬০০ বর্গফুটের চারতলা বাড়ির হারাহারি অংশ। যার প্রদর্শিত মূল্য ৭ লাখ ২৩ হাজার ৮১০ টাকা। এসব সম্পদ ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে।
এনআর/এমএ