স্ক্যামারদের ভয়ে ফেসবুক বন্ধ রেখেছেন আসিফ-হাসনাত-সারজিস-সাদিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও খান তালাত মাহমুদ রাফি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিবির সভাপতি সাদিক কায়েম, সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ ও আলোচিত ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সার্চ করে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাদের আইডিগুলো। অনেকেই বলছেন, এই আইডিগুলো ডিজেবল হয়ে গেছে।
তবে জানা যায়, স্ক্যামার গ্রুপ কর্তৃক আইডি ডিজেবলের শঙ্কা থেকে সতর্কতা স্বরূপ তারা আইডি ডি-অ্যাক্টিভেট করে রেখেছেন।
জানা গেছে, Crack Platoon-Bangladesh Cyberforce নামে একটি পেজ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত থাকা অনেকের আইডি ও পেজ ডিজেবল করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে সাইয়্যেদ আবদুল্লাহ, খান তালাত মাহমুদ রাফি।
পেজে বলা হয়, স্বাধীনতাবিরোধী প্রচারণায় জড়িত থাকার অভিযোগে Saiyed Abdullah পেজটি ফেসবুক থেকে রিমুভ করা হয়েছে।
অন্য আরেক পোস্টে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আবার মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রামে যে নৈরাজ্য হয়েছে তা কথিত সমন্বয়ক রাফির মাধ্যমে হয়েছে। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং পুলিশ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে খান তালাত মাহমুদ রাফির আইডি পার্মানেন্ট ডিজেবল করে দেওয়া হয়েছে।
পেজে আরেক পোস্টে বলা হয়, ছাত্রলীগের ভেতর থেকে জুলাই ষড়যন্ত্রের অন্যতম নৈরাজ্যকারী, জঙ্গি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হাসনাত আবদুল্লাহর আইডি উড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানোর পর ভয় পেয়ে সে ডিজেবল করে রেখেছে। বাংলার অনলাইন রাখিব রাজাকার মুক্ত স্লোগানেই আমাদের এই যাত্রা। Crack Platoon-Bangladesh Cyberforce & রাজ্যসভা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিদের যম।
এদিকে মুয়াজ আবদুল্লাহ নামের এক আইডি থেকে দাবি করা হয়, নিঝুম মজুমদারের দেওয়া ২০ হাজার ইউএস ডলারের বিনিময়ে কোনো এক টিম সাইবার অ্যাটাক শুরু করছে। ফলশ্রুতিতে সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহ ভাই, আসিফ মাহমুদ ভাই, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ভাই ও তালাত রাফির আইডি ডিজেবলড। আরও সবার আইডি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
তবে বিষয়টি সত্য নয় বলে জানিয়েছে Crack Platoon-Bangladesh Cyberforce. এক পোস্টে বলা হয়, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং সেই চেতনা লালন করি। ব্যক্তি উদ্যোগে আমরা এসব রাজাকারদের ঘুম হারাম করছি। আমাদের ATeam বা Nijhum mujomdar এর Crack Platoon-Bangladesh Cyberforce ও রাজ্যসভার কোনো সম্পর্ক নেই।
এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ও সভাপতি সাদিক কায়েম ভাইসহ অন্যান্যরা আইডি ডি-অ্যাক্টিভেট করে রেখেছি। আওয়ামী লীগের সাইবার টিম কয়েকটি আইডি ডিজেবল করে দিয়েছে। তাই নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে হাসনাত, সারজিস, আসিফ মাহমুদও আইডি ডি-অ্যাক্টিভেট করে রেখেছে। স্ক্যামার গ্রুপকে শনাক্ত করে নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে আইডি অ্যাক্টিভেট করা হবে।
এ বিষয়ে রাত ১০টার দিকে সাইয়্যেদ আবদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, গতকাল বিকেলে হঠাৎ একটি মেসেজ পেলাম যে আমার আইডিটি ডিজেবল করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরে আইডিতে গিয়ে সিকিউরিটি নিশ্চিত করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। কিন্তু পরবর্তীতে দেখলাম আইডিটা সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাইবার টিম এ ঘটনায় জড়িত রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আইডি সাসপেন্ড হওয়ার পর তাদের বিভিন্ন পেজ থেকে আমরা যারা আন্দোলনে ছিলাম তাদেরকে টার্গেট করে এটা করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এজন্য আজকেও অনেকের আইডি সাসপেন্ড হয়েছে জানতে পেরেছি। ফেসবুকে রিপোর্ট করে আওয়ামী লীগের সংঘবদ্ধ চক্র এটি করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম তার একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, বিশেষ নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে আমার আইডিটি ডি-অ্যাক্টিভেট করা হচ্ছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।
কেএইচ/এমজেইউ