দুর্নীতি-সিন্ডিকেটের কবলে রাজউক ও গণপূর্ত, দুদক অভিযানে সত্যতা
ঘুষ-দুর্নীতি ছাড়া মিলে না সেবা। প্লট বরাদ্দ থেকে প্লট-ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয় কিংবা যে কোনো সেবা গ্রহণ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১ জানুয়ারি) ছদ্মবেশে সেবা গ্রহীতা সেজে রাজউক ও গৃহায়ন অফিসে পৃথক এনফোর্সমেন্ট অভিযানের গিয়ে দুদক টিম দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদক জানায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে ছদ্মবেশে রাজউকের প্লট ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তথ্য সংগ্রহকালে প্লট ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়ে রাজউক কর্মচারীদের যোগসাজশে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের নিকট থেকে অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এছাড়া প্লট বরাদ্দ প্রাপকদের নথি গায়েব ও বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রবাসী মালিকদের ছবি পালটিয়ে ভুয়া মালিক সাজিয়ে প্লট বিক্রয়ের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে দুদক।
অন্যদিকে দুদকের অপর একটি টিম জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালায়। ওই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট গড়ে তুলে প্লট-ফ্ল্যাট দখল, প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি এবং কমিশন বাণিজ্য করার অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে বাস্তবায়নাধীন আবাসন প্রকল্প পরিদর্শন করে এবং অভিযোগে উল্লিখিত বিভিন্ন বেদখল হওয়া জায়গা পরিদর্শন করে প্রকল্পে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পায়। পরবর্তীতে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।
একই দিন অপর একটি টিম কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অথরাইজড অফিসারদের বিরুদ্ধে বিল্ডিং নির্মাণ কোড না মেনে নকশা অনুমোদন, বিশাল অঙ্কের লেনদেনের বিনিময়ে অনুমোদনহীন ভবনকে নোটিশ প্রদান করাসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে উক্ত অফিসের সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য সংগ্রহ করে দুদক টিম। এ অভিযানেও অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের মাইজকান্দি গ্রামের ৩টি ব্রিজ ও ব্রিজের অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে দুদকের গোপালগঞ্জ অফিস।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে অ্যাপ্রোচ সড়ক না থাকার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়। ব্রিজের অ্যাপ্রোচ সড়ক না থাকায় ব্রিজ থেকে পড়ে গিয়ে একজন ভুক্তভোগীর বাম পা কেটে ফেলতে হয়েছে বলে টিম নিশ্চিত হয়। ওই প্রকল্পে কাজ না করেই ৭৮ লাখ টাকার বিল উত্তোলনের প্রমাণ মিলেছে।
আরএম/এমএন