হত্যা-হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ৯৫২ পুলিশ
প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তখন তুঙ্গে। আন্দোলন দমাতে চলছে গুলি। ছাত্র-জনতার লাশ পড়ছে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে। এরই মধ্যে নিজ কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে শেখ হাসিনা বললেন, ‘আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানো হয়েছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু বলে দিতে চাই, শেখ হাসিনা পালায়নি, পালায় না।’
২২ জুলাই শেখ হাসিনা এ বক্তব্য দেন। ১৩ দিনের মাথায় তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। যার মধ্য দিয়ে অবসান হয় দেড় দশকের জুলুম-জালিয়াতির শাসন।
এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—
প্রথম আলো
২০২৪, স্বৈরশাসন থেকে মুক্তির বছর
ঘটনাবহুল ২০২৪ সালের শুরুতে ছিল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগের দুই নির্বাচনের মতো এটাও ছিল পাতানো নির্বাচন। তবে প্রতিটি নির্বাচনে জেতার পদ্ধতি ছিল ভিন্ন। ২০১৪ সালে ছিল একতরফা বা বিনা ভোটের নির্বাচন। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল আরও জালিয়াতিপূর্ণ; যা ‘রাতের ভোট’ নামে পরিচিতি পায়। ২০২৪ সালে এসে হয় ‘ডামি নির্বাচন’। বিএনপিসহ ছোট-বড় অনেক দলের বর্জনের মুখে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত এই নির্বাচনটিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখাতে আওয়ামী লীগে নিজ দলের ‘ডামি’ প্রার্থী দাঁড় করায়। আওয়ামী লীগ ও ডামি আওয়ামী লীগ (দলের স্বতন্ত্ররা) মিলে ২৮০টি আসন পায়। তার আগে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার ও সাজা দিয়ে কোণঠাসা করা হয়।
যুগান্তর
বছরজুড়েই যন্ত্রণায় অসহায় ভোক্তা
বছরজুড়েই মূল্যস্ফীতির আঘাতের যন্ত্রণায় ছিল ভোক্তা। বছরের নয় মাসই সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ শতাংশের ওপরে। এর মধ্যে চার মাসই ছিল ডাবল ডিজিটে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আট মাসই ছিল ডাবল ডিজিটে। বাকি তিন মাস ডাবল ডিজিটের কাছাকাছি। চলতি মাসেও সাধারণ মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ডাবল ডিজিটে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মজুরি বৃদ্ধির হার খুবই সামান্য। মূল্যস্ফীতির তুলনায় মজুরি বৃদ্ধির হার একেবারেই কম। ফলে ভোক্তার আয়ের চেয়ে খরচ বেশি হচ্ছে। টানা সোয়া দুই বছর এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় ভোক্তার সঞ্চয়ও শেষ হয়ে গেছে। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, জুনের মধ্যে এ হার কমে আসবে।
বণিক বার্তা
শ্রীলংকা নয় তিউনিশিয়ার পথেই হাঁটছে কি বাংলাদেশ?
তিন দেশ তিউনিশিয়া, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ। এর মধ্যে তিউনিশিয়ার শাসক পালিয়ে যান ২০১১ সালে। জেসমিন বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশটি ত্যাগ করেন জাইন আল আবেদিন বেন আলি। ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ছেড়ে শ্রীলংকা থেকে পালিয়েছিলেন রাজাপাকসে ভাইদের মধ্যে ‘স্ট্রংম্যান’ হিসেবে পরিচিত গোতাবায়া রাজাপাকসে। সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন দেড় দশক ধরে বাংলাদেশ শাসন করা শেখ হাসিনা। তিনটি অভ্যুত্থানের মধ্যেই মিল হলো পতিত এ তিন সরকারই ছিল ফ্যাসিস্ট চরিত্রের। নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তরুণদের দ্রোহের মধ্যে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এলে এসব স্বৈরশাসক দেশ ছেড়ে পালান।
মানবজমিন
কমলাপুরে মানুষ কেনাবেচার এই চক্রটিতে ১০ থেকে ১২ জন। সোমবার কমলাপুর রেলস্টেশনে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় চক্রটির মূলহোতা রুবেলের সঙ্গে। এক ব্যক্তিকে ক্রেতা সাজিয়ে তার কাছে একটি শিশুর চাহিদার কথা জানানো হয়। শুরুতে সে এড়িয়ে যেতে চাইলেও তার এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে আনে। একপর্যায়ে চাহিদামতো শিশু এনে দিতে পারবে বলে জানায়, দাবি করে মোটা অঙ্কের অর্থ। শুধু শিশু নয় কিশোরী ও তরুণীদেরও বিক্রি করে দেয়ার তথ্য দেয়। তরুণীদের গর্ভে অবৈধভাবে ধারণ করা সন্তান বিক্রিরও প্রস্তাব দেয়। একটি পাঁচ মাসের ছেলে সন্তান বিক্রির জন্য দরদামও হাঁকায়।
কালের কণ্ঠ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বিএনপি ও জামায়াতের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে দল দুটির মধ্যে দূরত্ব স্পষ্ট হতে থাকে। গত রবিবার বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভী জামায়াতের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনার পর তাদের মতবিরোধ প্রকাশ্যে আসে।
মূলত গণ-অভ্যুত্থানের পর ইসলামী ব্যাংক ‘দখল’কে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এরপর বিএনপির বিরুদ্ধে সারা দেশে ‘দখলদারিত্বের’ নানা অভিযোগ আনেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
যুগান্তর
হত্যা-হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ৯৫২ পুলিশ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পুলিশের তৎকালীন শীর্ষ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে পুরো বাহিনীকে ব্যবহার করে। সারা দেশে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা ও আহত করায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এ বাহিনী। ফলে ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর ছাত্র-জনতার তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে পুলিশ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করলে ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনেরা মামলা করা শুরু করেন। হত্যা ও হত্যাচেষ্টার এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরাও আসামি হন। পুলিশের সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কনস্টেবলরাও আসামির তালিকায় আছেন।
আরও পড়ুন
বণিক বার্তা
সাড়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পরও নেমে গেছে প্রাথমিক শিক্ষার মান
শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের ভিত তৈরি হয় প্রাথমিক পর্যায়ে। এজন্য উন্নত দেশগুলোয় প্রাথমিক পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে গুরুত্ব দেয়া হয়। বাংলাদেশেও প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নের কথা বলে গত এক যুগে দুটি বৃহৎ প্রকল্পের আওতায় ব্যয় করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। যদিও জাতীয় শিক্ষার্থী মূল্যায়ন প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে করা এ বিপুল ব্যয়ের প্রভাব পড়েনি শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্সে। বরং এ সময়ে কয়েকটি ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্সের আরো অবনতি ঘটেছে।
আজকের পত্রিকা
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির হিসাব অনুযায়ী, পাঁচজনের সংসারের মাসিক খরচ ২৭-২৮ হাজার টাকা, যার মধ্যে শুধু খাবারের খরচই ১০ হাজার টাকা। সংসারের এই চাপ সহ্য করতে, ছেলে স্কুল ছেড়ে বাবার সঙ্গে কাজ শুরু করেছেন এবং মেয়ে টিউশনি করছেন। তা সত্ত্বেও পরিবারের চাহিদার বিপরীতে সীমিত আয় দিয়ে গত এক বছরের মূল্যবৃদ্ধির দ্বৈরথে পেরে উঠছে না সাইফুলের সংসার। এই চিত্র সারা দেশে কোটি সাইফুলের পরিবারেই।
টিবিএস
এ বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৬৪ শিশু; দেরিতে শনাক্ত ও হাসপাতালে ভর্তি মূল কারণ
চলতি বছর দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ থেকে ১৫ বছর বয়সী মোট ৬৪ জন শিশু মারা গেছে। আর গতকাল (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত হিসেবে মোট মারা গেছেন ৫৭৩ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে নারী ৫১.২ শতাংশ এবং পুরুষ ৪৮.৪ শতাংশ।
আর শিশুদের মধ্যে ২৬ জনের বয়স ৫ বছরের মধ্যে, ২২ জনের বয়স ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে এবং ১৬ জনের বয়স ১১ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। দেরিতে রোগ শনাক্ত ও হাসপাতালে ভর্তির কারণে শিশু এবং নারীদের মৃত্যুর হার বেশি বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
কালের কণ্ঠ
বেনজীরের দম্ভচূর্ণ থেকে সরকার পতন
চরম পরাক্রমশালী পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ। বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী সরকারের সর্বোচ্চ প্রভাবশালী কর্মকর্তা, যিনি একই সঙ্গে ছড়ি ঘুরিয়ে গেছেন প্রশাসন ও রাজনীতিতে। ফলে তাঁকে ঘিরে জনমনে নানা প্রশ্ন আর কৌতূহলের অন্ত ছিল না। এমনকি অবসরের পরও তিনি ছিলেন সবার কাছে এক অমীমাংসিত ধাঁধা।
কালবেলা
গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন ৭০ ভাগ অপ্রয়োজনে
দেশে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রির হার অস্বাভাবিক। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ওমিপ্রাজল, ইসমোপ্রাজল ও প্রেন্টাপ্রাজল জেনেরিক গ্রুপভুক্ত তিনটি ব্র্যান্ডের ওষুধ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭৮০ কোটি টাকার। দেশের মোট ওষুধের বাজারের বড় অংশই দখল করে আছে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ। গত অর্থবছরে দেশের বাজারে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৭০ শতাংশ গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন করা হয় অপ্রয়োজনে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই। অধিকমাত্রায় দীর্ঘমেয়াদে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়তে পারে (মাল্টি অর্গান ফেইলিউর), এমনকি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে স্নায়ুতন্ত্র। তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মুড়িমুড়কির মতো গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন না করতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
এছাড়া রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ; হার্ডলাইনে সরকার; মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনই আসল সরকার; অভূতপূর্ব লাল চব্বিশ; তারেক রহমান / শেখ হাসিনা পালালেও সামনে আরেক বড় যুদ্ধ—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।